নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীর তানোরে দীর্ঘ প্রায় ২০ থেকে ২৫ দিন যাবত স্কুল মাঠের আমবাগানে জমি থেকে উত্তোলনকৃত আলু রাখা হয়েছে। সেই আলু বাহিরে নিতে কোম্পানির দেরি হওয়ার কারণে পচে গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে।
দ্রুত পচা আলু সরানোর জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
সরেজমিন দেখা যায়, তানোর-চৌবাড়িয়া রাস্তা সংলগ্ন চাঔড় নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি। মূল রাস্তার মালার মোড় পার হয়ে রাস্তার পূর্ব দিকে স্কুল ও মাদ্রাসা রয়েছে। স্কুলের সামনের মাঠে এক কোম্পানির আলু জমি থেকে উত্তোলন করে বাছায়ের জন্য ট্রাকে করে অন্যত্র নেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু দীর্ঘ দিন এভাবে রাখার কারণে পচে চরম দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে। স্কুলে কোনভাবেই থাকতে পারছেন না শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। যারা আবার আসছেন তারা গন্ধে ক্লাস থেকে বের হতে পারছেন না। কারণ স্কুলের সামনেই শতশত মণ আলু পচে আছে।
কয়েকজন শিক্ষার্থীর ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকার পর চালু হয়েছে। কিন্তু প্রায় ২০-২৫ দিন ধরে স্কুলের মাঠে ও আম বাগানে প্রচুর পরিমাণ পচা আলু রাখা রয়েছে। সেই সব আলু এমনভাবে পচে গেছে গন্ধে স্কুলে থাকায় কষ্ট কর। আমরা বারবার স্যারদের বলছি হয় পঁচা আলু সরাতে হবে নচেৎ ক্লাসে আসব না। কে শোনে কার কথা। এমন আলুর গন্ধের কারণে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
বালিকা স্কুলের পূর্বে রয়েছে সরকারি প্রাথমিক স্কুল। সেখানেও ছড়িয়ে পড়েছে গন্ধ। আর বালিকা বিদ্যালয়ের সামনে মাঠ ও আম বাগানের পরেই রয়েছে মাদ্রাসা। এক কথায় পচা আলুর গন্ধ এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ পথচারীদের মাঝে ছড়িয়ে পড়ছে। বাতাসের গতির সঙ্গে আশপাশে ছড়িয়ে পড়ছে পচা আলুর গন্ধ।
শিক্ষকরা জানান, আমরা একাধিক বার এগ্রিকনসার্নের মালিক শেখ আব্দুল কাদেরসহ অনেককে বলার পরও শুনছেন না তারা। আবার উল্টো আমাদেরকেই হুমকি দিয়ে বলছেন, কোম্পানির মালিক মন্ত্রীর লোক বেশি বাড়াবাড়ি করলে সমস্যা আছে। এই ভয়ে আমরাও কিছু বলতে পারছি না।
আপনারা স্কুল মাঠ ভাড়া দিয়েছেন জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক সুলতান আহম্মেদ জানান, ভাড়া দেওয়ার প্রশ্নই উঠে না। বরং পঁচা আলুর গন্ধে স্কুলে থাকায় কষ্ট কর।
এ ব্যাপারে এগ্রিকনসার্নের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেখ আব্দুল কাদের জানান, কোম্পানির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদেরও দেখা মিলছে না। আমরা তো সারা জীবন থাকব না। পচা আলু সরিয়ে ফেলা হবে। খুব বেশি গন্ধ হয়নি বলে এড়িয়ে গেছেন তিনি।
প্রধান শিক্ষক সুলতান আহমেদ আরও জানান, আমবাগানে ছায়ার তলে জায়গা দেখে তারা বলল অল্প সময়ের মধ্যেই কাজ শেষ করা হবে। আমিও বলেছি পচা আলুর গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে দ্রুত সরিয়ে ফেলুন। তারা অবশ্য আশ্বাস দিয়েছে দুয়েক দিনের মধ্যে সরিয়ে ফেলবে। কিন্তু এখনো সরানো হয়নি। এতে স্কুল খোলা রেখে পরিচালনা করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে বলে জানান প্রধান শিক্ষক।
প্রসঙ্গত, এগ্রিকনসার্ন নামের কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেখ আব্দুল কাদের উপজেলার কামারগাঁ ইউপির চাঔড় গ্রামের মোহাম্মাদ আলী পুত্র। তিনি হরিপুর গ্রামের আশপাশে ৯০০ বিঘা অন্যের জমিতে আলু রোপণ করেছিলেন। তারা সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে জমি লিজ না নিয়ে গভীর নলকূপ অপারেটরের মাধ্যমে জমি নিয়েছেন।