নিজস্ব প্রতিনিধি,তানোর: খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আগে ফসলের নিরাপত্তা আবশ্যক। আর ফসলের নিরাপত্তায় কীটনাশকের (বালাইনাশক) ভূমিকা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তবে মাঠপর্যায়ে বিভিন্ন কোম্পানির কীটনাশকের মান নিয়ে প্রায়ই প্রশ্ন ওঠে। এমনটি ভেজালের ভিড়ে আসল কীটনাশক খুঁজে নেওয়া বেশ কঠিন। কৃষকদের এই সমস্যা থেকে উত্তরণের নতুন এক পন্থা উদ্ভাবন করেছেন রাজশাহীর তানোর উপজেলার দুই সরকারি কর্মকর্তা। তৈরি করেছেন ‘বালাইনাশক সহায়িকা’ নামক একটি মোবাইল অ্যাপ।
শুরুটা বেশ কিছুদিন আগে। মাঠ পরিদর্শনকালে তানোর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ আহম্মদ দেখেন, কীটনাশকের দোকানগুলোতে জানা-অজানা পণ্যের ভিড়ে ভেজাল চিহ্নিত করা কঠিন। কথা বলেন সহকর্মীদের সঙ্গে। অফিসে কর্মরত উপসহকারী কর্মকর্তা আলী রেজা খানের প্রযুক্তির প্রতি আগ্রহের কারণে তাঁকে কীটনাশকের ডেটাবেস নিয়ে কোনো মোবাইল অ্যাপ বানানো যায় কি না, তা চেষ্টা করতে বলেন। তারপর শুরু হয় কর্মযজ্ঞ। তথ্যপ্রযুক্তির প্রতি অনুরাগী আলী রেজা সিদ্ধান্ত নেন তথ্যপ্রযুক্তির পাখায় ভর করে কৃষকদের জন্য কিছু করতে। গুগল ও ইউটিউবের সহায়তায় এবং উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে কঠোর পরিশ্রমে তৈরি করেন বালাইনাশক সহায়িকা নামে অনুমোদিত কীটনাশকের একটি পূর্ণাঙ্গ অফলাইন ডেটাবেস, যা অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল অ্যাপ।
যেকোনো অ্যান্ড্রয়েড ফোনে চলবে এই অ্যাপ। লাগবে না ইন্টারনেট সংযোগ। এর মাধ্যমে জানা যাবে, কোন প্রতিষ্ঠান কোন বাণিজ্যিক নামে কীটনাশক বাজারজাত করছে। নির্দিষ্ট কীটনাশকের ফসলভিত্তিক অনুমোদিত প্রয়োগ মাত্রা। চিহ্নিত করা যাবে ভুয়া এপি নম্বর। এই অ্যাপটিতে রয়েছে বাতিল করা এবং অনুমোদিত জৈব কীটনাশকের তালিকা। নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় বিদ্যমান উপকরণ কাজে লাগিয়ে জৈব কীটনাশক তৈরির কৌশল জানা যাবে এই অ্যাপে প্রবেশ করলে।
এর বাইরেও অ্যাপটি মাঠপর্যায়ে কীটনাশকের মান নিয়ন্ত্রণে দেশব্যাপী কর্মকাণ্ডকে বেগবান করবে।