

শান্ত খান ঢাকা জেলা প্রতিনিধিঃ সাভারের আশুলিয়ায় দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক স্কুলশিক্ষার্থী (১৮) আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণের অভিযোগে এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (১৮ মার্চ) রাত ২টার দিকে আশুলিয়ার এনায়েতপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
এর আগে ভুক্তভোগী ওই স্কুল শিক্ষার্থীর মা বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন মামলা নং- ৫৭ ।
গ্রেফতারকৃত যুবকের নাম রনি (২০) সে আশুলিয়ার নিরিবিলি স্বপ্নবিলাস আবাসিক এলাকার দেলোয়ার হোসেন ওরফে দিলা মিয়ার ছেলে। এবং ভুক্তভোগী
ওই স্কুলশিক্ষার্থীর বড় ভাইয়ের বন্ধু।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, প্রায় এক বছর আগে পোশাক পরিবর্তনের সময় অভিযুক্ত রনি ওই শিক্ষার্থীর আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করে। সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে স্কুলশিক্ষার্থীকে একাধিকবার ধর্ষণ করে। এছাড়া রনি ফেসবুকে ভুয়া আইডি খুলে ওই শিক্ষার্থীর বান্ধবীদের ভিডিও পাঠিয়ে ভুক্তভোগীর কাছে টাকা দাবী করে তার মানসিক চাপ আরোও বাড়িয়ে তুলেন।
এব্যাপারে ভুক্তভোগীর পরিবার জানায়, অভিযুক্ত রনির মা প্রবাসে চাকরিরত। তার বাবা দিলা মিয়া দ্বিতীয় বিয়ে করে আলাদা থাকেন। তাই তার খাবার সুবিধার্থে ভুক্তভোগীর ভাইয়ের সাথে বন্ধুত্বের সুযোগে তাদের বাসায় মাসিক তিন হাজার টাকা চুক্তিতে তিন বেলা খাবার খেত। প্রথম দিকে টিফিন কেরিয়ারে করে খাবার নিলেও পরে সে ওই শিক্ষার্থীর বাসায় এসেই খাবার খেত।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জানায়, তার মা গার্মেন্টসে চাকরি করে। সেই সুযোগে ফাঁকা বাসায় গোপনে তার কাপর পালটানোর দৃশ্য মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে রনি এবং সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে তাকে মোট চারবার ধর্ষণ করে। পরবর্তীতে ভিডিওর ভয় দেখিয়ে বিকাশ নম্বরে কয়েকবার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। একপর্যায়ে বিষয়টি তার পরিবারকে জানালে কৌশলে বিকাশের দোকান থেকে রনিকে হাতেনাতে আটক করে তারা কিন্তু স্থানীয় মাতাব্বররা মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে বিষয়টি আপোষ করে দেন। এ সময় মাতাব্বররা জোরপূর্বক ভুক্তভোগীর পরিবারের কাছ থেকে সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিলে থানা পুলিশের আশ্রয় নেয় ওই শিক্ষার্থীর পরিবার।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এস আই) শ্যামল দত্ত গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, স্কুল শিক্ষার্থী ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত রনিকে রাতেই গ্রেফতার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে আশুলিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জিয়াউল ইসলাম বলেন, অভিযোগের পর গ্রেফতার করে অভিযুক্তকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন সরদার বলেন, আমরা অভিযোগ পেয়েছি। স্কুল শিক্ষার্থীসহ ধর্ষণের পৃথক ঘটনায় ২ আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং যারা জড়িত তাদের আটক করা হবে।