তানোর(রাজশাহী)প্রতিনিধিঃ রাজশাহী-১ আসনে আওয়ামী লীগের তৃণমূলে আদর্শিক নেতৃত্ব দিনে দিনে দখল করে নিচ্ছে অনুপ্রবেশকারী ও পরিবার কেন্দ্রিক ক্ষমতাধরেরা। আদর্শিক নেতৃত্বের কবর দিয়ে আওয়ামী লীগকে হাইব্রিড অনুপ্রবেশকারী নেতৃত্ব নির্ভর করা হচ্ছে বলে গুঞ্জন উঠেছে। অভিযোগের তীর উঠেছে, হঠাৎ আওয়ামী লীগের এক চেযারম্যানের দিকে। যিনি এমপির বগলের নিচে স্থান নিয়ে এই নেতা, ওই নেতা, এই কর্মী সেই কর্মী খারাপ এমপির কানে এই মন্ত্র সেই মন্ত্র দিয়ে এবং এই বাদ সেই বাদ এসব করে জননন্দিত এমপিকে জনবিচ্ছিন্ন করার অপচেস্টা করা হচ্ছে, ঠগ বাছতে গাঁ-উজাড় বা চেয়ারম্যানের বায়না রক্ষা করতে গিয়ে আওয়ামী লীগের আদর্শিক ও ত্যাগী নেতাদের কোনঠাসা করে মাথাভারী নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে বলে মনে করছে তৃণমুল।

স্থানীয় সুত্র বলছে, একশ্রেণীর দায়িত্বশীল নেতা আর্থিক সুবিধার মোহে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে বির্তকিত মুখের। তাদের নেপথ্যে মদদে অনুপ্রবেশকারী পুঁজিপতি কালো টাকার মালিক যাদের রাজনৈতিক জীবনটাই পালাবদলের তারা অর্থ এবং পেশী শক্তির দাপটে ত্যাগী, আদর্শবান ও নিবেদিতপ্রাণ সংগঠকদের বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগকে বাপ দাদার সম্পত্তিতে পরিণত করেছে বলে তৃণমুলের অভিমত। আবার জনপ্রতিনিধি নেতাদের অনেকে একচ্ছত্র আধিপত্য ধরে রাখতে বশংবদ সৃস্টি করে তৃণমূলের অংগ, সহযোগি বা সমমনা সংগঠনগুলোতে আধিপত্য বিস্তারে সদা তৎপর রয়েছে।

অনুসন্ধান বলছে, অধিকাংশক্ষেত্রে নিজের স্ত্রী-ছেলে-মেয়ে, ভাই-ভাতিজা, পরিবারের সদস্য, আত্মীয়-স্বজন, কর্মচারী এমনকি তল্পীবাহকদের যোগ্যতা কম বা না থাকলেও বিভিন্ন দলীয় সংগঠনের মূল পদে বসিয়ে ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতে ব্যস্ত। কোন কোন ক্ষেত্রে ধণাঢ্য অনুপ্রবেশকারীরাও বিশেষ কারণে স্থানীয় পর্যায়ে দলীয় মনোনয়ন, পদ পদবী, ব্যবসা বাণিজ্য এবং দলীয় সুযোগ সুবিধা পেয়ে যাচ্ছে। প্রথমে বিভিন্ন স্তরে দলীয় যোগ্য ও জনপ্রিয় প্রার্থীর মনোনয়ন, পদায়নের বিরোধিতা করে থাকেন এসব জনপ্রতিনিধি নেতারা। তাতে ব্যর্থ হলে দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে বা কৌশলে প্রার্থী দাঁড় করিয়ে বা অন্য কোন উপায়ে পরাজয় ঘটাতে মরিয়া হয়ে উঠেন; কোন ক্রমেই পরিবার বা নিজের গন্ডির বাইরের কাউকে সুযোগ দিতে চান না তারা। এছাড়া, কোন কোন সম্মানিত সিনিয়র নেতা ব্যক্তির চেয়ে বাপ দাদা, চাচা-মামার পরিচিতিকেই বড় করে দেখেন। জনপ্রিয়তা, যোগ্যতা, অবদান এবং সাংগঠনিক দক্ষতা থাকা সত্বেও দলীয় পদ এবং মনোনয়ন বঞ্চিত করা হয় তৃণমূলের সৎ, জনপ্রিয় এবং ভাল রাজনীতিবিদদের।

এমনকি দলের কর্মকান্ডে সক্রিয় হতে বাধা দেয়াসহ দলীয় সকল সুযোগ সুবিধা থেকে ক্ষমতার জোরে বঞ্চিত করা হয় এবং আর্থিক মেরুদন্ড ভেঙ্গে দেয়া হয় তাদের। শুধু তাই নয়, সমর্থকসহ তাদের নিশ্চিহ্ন করতে মামলা হামলা এবং অত্যাচার নির্যাতনসহ বিভিন্নভাবে হেনস্থা করা হয়। বার বার বঞ্চনা ও হয়রানীতে অতিষ্ঠ হয়ে অনেকেই নিষ্ক্রীয় হয়ে পড়েন। কেউ কেউ হারিয়ে যেতে বাধ্য হন রাজনীতির মাঠ থেকে। ফলে, জনপ্রিয়, যোগ্য ও আদর্শবান নেতৃত্ব বিকশিত হতে পারছে না তৃণমূলে; দল হয়ে যাচ্ছে পরিবারের পকেটে বন্দি। এত উন্নয়নের পরেও দলের কর্মী বাড়ছে না! এভাবেই পারিবারিক অপশক্তি নিজেদের স্বার্থে যোগ্য, জনপ্রিয়, আদর্শবান ও নিবেদিতপ্রাণ সংগঠকদের মাইনাস করতে করতে দিনে দিনে ধ্বংস করে দিচ্ছে আওয়ামী লীগের গর্বিত তৃণমূল।অথচ তৃণমুলই আওয়ামী লীগের প্রাণ এরা কখানো কোনো সুবিধা নিতে দল ত্যাগ করে না, তাই তৃণমূল বাঁচলে আওয়ামী লীগ বাঁচবে। স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকগণের ভাষ্য আওয়ামী লীগকে সাংগঠনিকভাবে গতিশীল ও আদর্শিক নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে হলে মোটা দাগে কয়েকটি বিষয় চিহ্নিত করা হয়েছে।

প্রথমত তৃণমূলে কোন কোন পরিবার দলীয় পদ পদবী, ক্ষমতা এবং দলীয় সুযোগ সুবিধা কুক্ষিগত করে রেখেছে, দ্বিতীয়ত কারা আওয়ামী লীগকে নিজের পকেট এবং পরিবারের মধ্যে ঢুকিয়ে রেখেছেন, তৃতীয়ত কারা যোগ্য এবং ভাল রাজনীতিবিদদের বঞ্চিত কোণ, ঠাসা, হয়রানী করছেন চতুর্থত অনুপ্রবেশকারী লুটেরা, চাঁদাবাজ, মাদক সম্রাটদের কারা আশ্রয় প্রশ্রয় দিচ্ছেন, পঞ্চমত কারা জনস্বার্থ এবং আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছেন, ষষ্ঠতম কোন কোন নেতা, জনপ্রতিনিধি অনৈতিক সুবিধার বিনিময়ে পদ পদবী ও দলীয় মনোনয়ন দিচ্ছেন এবং কোন কোন পরিবার হঠাৎ করে বিপুল পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়েছেন-? ইত্যাদি অন্যতম। বিশ্লেষকগণ বলছেন, অবিলম্বে এদের চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় বা সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে আগামিতে আওয়ামী লীগ সাংগঠানিকভাবে ক্ষতির মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে