

বাঘা প্রতিনিধিঃরাজশাহীর বাঘায় ঈদের দিনে জামায়াতে ইসলামীর উপজেলা শাখা সাংবাদিক সংবাদ সম্মেলন করেছে। উপজেলার বাউসা ইউনিয়ন বিএনপি’র নামধারী সন্ত্রাসী কর্তৃক নিরীহ জামাত শিবির নেতা কর্মীদের উপর হামলা,বাড়ি ঘর ভাঙচুর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান লুটপাট এবং অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (৩১ মার্চ) পবিত্র ঈদুল ফিতর ঈদের দিনে রাত ৮ টার সময় বাঘা ডাকবাংলা সংলগ্ন জামায়াতের অফিসে সংবাদ সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়। লিখিত বক্তব্য টি হুবহু নিম্নে তুলে ধরা হলো!
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
বাউসা ইউনিয়নের বিএনপি নামধারী সন্ত্রাসী কর্তৃক নিরীহ জামাত-শিবির নেতাকর্মীদের ওপরে
হামলা, বাড়িঘর ভাঙচুর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান লুটপাট ও অগ্নি সংযোগের প্রতিবাদে আজকের এই
সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়া ও অনলাইন নিউজ পোর্টালের সম্মানিত সাংবাদিকবৃন্দ ও সম্মানিত উপস্থিতি আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।
সম্মানিত সাংবাদিকবৃন্দ,
বাউসা ইউনিয়ন পরিষদে দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ জনগণ ও বিভিন্ন সেবা গ্রহীতারা ইউনিয়ন
পরিষদের কর্তা ব্যক্তিদের দ্বারা বিভিন্ন ধরনের অন্যায় দুর্নীতি ও হয়রানির শিকার হয়ে
আসছিলেন। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এই ঘটনার নিয়মতান্ত্রিক প্রতিবাদ করে আসছিলেন
তারই ধারাবাহিকতায় গত ২০/৩/২০২৫ তারিখে ইউনিয়ন পরিষদের অন্যায় ও দুর্নীতির প্রতিবাদে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বাউসা ইউনিয়ন সংগঠন একটি মানববন্ধনের আয়োজন করে। কিন্তু অত্যন্ত লজ্জা ও পরিতাপের বিষয় জামায়াতের শান্তিপূর্ণ মানববন্ধনে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিমের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী জামায়াতের মানববন্ধনে অতর্কিত ভাবে হামলা করে। যা দেশের বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়েছে। সম্মানিত সাংবাদিক বৃন্দ
পরবর্তীতে ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ঐই দিন দুপুর ২ টার সময় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীনবাউসা ইউনিয়নের সভাপতি মাওলানা মুজিবুর রহমান বাঘা থানায় দোষীদের ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পরবর্তীতে জামায়াত নেতার অভিযোগের ভিত্তিতে বাঘা থানার পুলিশ ঘটনা তদন্ত করেন এবং ২৩/৩/২০২৫ তারিখে বাঘা থানার ওসি সাহেবের মধ্যস্থতায় উক্ত ঘটনার সুন্দর এবং স্বাভাবিক মীমাংসা অনুষ্ঠিত হয়। জামায়াত আইনের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে
উক্ত মীমাংসা মেনে নিয়ে জামায়াতে ইসলামী তার স্বাভাবিক কর্মকান্ড পরিচালনা করে
আসছিলেন। সাংবাদিকবৃন্দ:
কিন্তু গত ৩০/৩/২৫ তারিখে পূর্ব কোন ঘটনা ব্যতিরেখেই বাউসা ইউনিয়নের দীঘা ওয়ার্ডের ছাত্র
শিবিরের সেক্রেটারি সৌরভ এর উপরে অতর্কিতভাবে হামলা পরিচালনা করে। সৌরভ ওইদিন
আড়ানী থেকে তার সাংগঠনিক কাজ শেষ করে দিঘায় তার বাড়িতে ফিরছিল। প্রতিমধ্যে রাস্তার
এক নির্জন জায়গায় বাউসা ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি রেজাউল করিমের ভাতিজা
আরাফাতের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী সৌরভের পথ রোধ করে এবং তাকে বিভিন্ন ধরনের ধারালো
অস্ত্র দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে উপর্যুপরি আঘাত করে। সেই সময় সৌরভের চিৎকার চেঁচামেচিতে
এলাকার লোকজন তাকে উদ্ধার করতে এগিয়ে আসলে বিএনপি নামধারী সন্ত্রাসী আরাফাত, রতন,
মুমিন রাজীব, আকাশ, পালিয়ে যায়। পরে এলাকার লোকজন এর সহযোগিতায় সৌরভকে উদ্ধার
করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। সৌরভ এখনো বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে
চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছে।
সম্মানিত সাংবাদিক বৃন্দ
ঘটনার এখানেই শেষ নয়, আহত সৌরভের সহকর্মীবৃন্দ তার বাড়িতে তার বাবা-মায়ের সাথে দেখা
করতে যাওয়ার পথে বাউসা বাজারে পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা বিএনপির নামধারী সন্ত্রাসীদের
হামলার শিকার হন জায়াত-শিবির নেতাকর্মীরা। উক্ত ঘটনায় শিবির কর্মী মারুফ, মুন্না, এবং ফয়সালকে চাইনিজ কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে যখম করে। এবং তাদের ব্যবহৃত পাঁচটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর অগ্নি সংযোগ করে। এ সময় বিএনপি’র সন্ত্রাসীরা বাউসা বাজারে অবস্থিত জামায়াত সমর্থিত বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ভাঙচুর এবং নগদ অর্থ লুটপাট করে। তন্যমধ্যে বাউসা বাজারের স্বনামধন্য ব্যবসায়ী টুটুলের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে নগদ দেড় লক্ষ টাকা লোটপাট করে। এ ঘটনায় আহত শিবির কর্মী ফয়সাল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছে।
সম্মানিত সাংবাদিকবৃন্দ,
ঘটনার এখানেই শেষ নয় বিএনপি’র নামধারী কতিপয় সন্ত্রাসীরা গতরাতে এক নারকীয়
ধ্বংসলীলায় মেতে উঠেছিল। বিএনপির নামধারী সন্ত্রাসীরা রাত দশটার পর থেকে নিরীহ জামাত-
শিবির নেতা কর্মীদের বাড়িতে হামলা ভাঙচুর ও লুটপাটের মত নিশংস খেলায় মেতে উঠে।
তন্মধ্যে বাউসা ওয়ার্ড জামাতের সভাপতি জনাব মিজানুর রহমান শিল্পীর বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর করে, তার বাড়ি থেকে আনুমানিক দুই লক্ষ টাকার বাদাম লুটপাট করে।বাউসার শিবির কর্মী রোহানের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর চালায় এবং তার বাড়ি থেকে নগদ ১০ হাজার টাকা এবং দুইটি বাইসাইকেল লুটপাট করে বিএনপির নামধারী সন্ত্রাসীরা।
একই সময়ে শিবিরকর্মী রোহানের বাবার বাউসা বাজারে অবস্থিত স-মিলে হামলা ভাঙচুর করে।
সম্মানিত সাংবাদিকবৃন্দ,
বিএনপি নামধারী সন্ত্রাসীরা ঈদের দিনও থেমে থাকেনি ঈদের নামাজের পরে ইউনিয়ান যুবদলের
নেতা এনামুলের নেতৃত্বে সশস্ত্র অবস্থায় ইউনিয়নের বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান নেয়, পরবর্তীতে বাঘা থানা ওসি সাহেব ও সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। সম্মানিত সাংবাদিকবৃন্দ, আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং আপনাদের মাধ্যমে প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি যে—
১. অবিলম্বে এ হামলার সঙ্গে জড়িত সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করতে হবে।
২. ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জন্য যথাযথ ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে হবে।
৩. রাজনৈতিক প্রতিহিংসার মাধ্যমে দেশে অস্থিরতা সৃষ্টি করার চক্রান্ত বন্ধ করতে হবে।
৪. আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নিরপেক্ষ ও দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে এ
ধরনের হামলার পুনরাবৃত্তি না ঘটে।
৫. জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
সম্মানিত সাংবাদিকবৃন্দ
আজকে আমাদের ডাকে এই সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত হওয়ার জন্য বাংলাদেশ জামায়াতে
ইসলামী বাঘা উপজেলার পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানিয়ে আমি আমার বক্তব্য শেষ করছি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন,
মাওলানা জিন্নাত আলী সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান, আব্দুল্লাহ আল মামুন উপজেলা সহ সভাপতি জামায়াতে ইসলাম, উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মোঃ ইউনুস আলী , অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম সুরা সদস্য রাজশাহী জেলা, মাওলানা আব্দুল লতিফ,অধ্যাপক সাবদার হোসেন প্রচার ও মিডিয়া বিভাগ, শাহাদত ইসলাম সহ উপজেলা ও ইউনিয়নের দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ