চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি ঃচাঁপাইনবাবগঞ্জের রামচন্দ্রপুরহাট এলাকার নিজ বাড়ি থেকে ছাত্রদল কর্মী তোফায়েল আহমেদ মিলনকে অপহরণের পর গুলি করে হত্যার অভিযোগে সাবেক এমপি আব্দুল ওদুদ ও র্যাবের সাবেক ডিজি বেনজির আহমেদসহ ১৬ জনকে আসামি করে মামলার আবেদন করা হয়েছে। ঘটনার ৯ বছর পর মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) রাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানায় মামলার এই আবেদন করা হয়। নিহত ছাত্রদল কর্মী তোফায়েল আহমেদ মিলনের চাচা ও রানিহাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা রহমত আলী বাদী হয়ে মামলার আবেদন করেন।
জানা যায়- আবেদনকৃত মামলায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওদুদকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। এছাড়াও মামলায় র্যাবের সাবেক ডিজি বেনজির আহমেদ ছাড়াও আসামি করা হয়েছে রানিহাটি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক মো. মহসীন আলী, শ্রমিক লীগ নেতা মো. জাকারিয়া, রানিহাটি ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মো.কামরুজ্জামান কায়েম, একই ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি আব্দুল মান্নান, নয়ালাভাঙ্গা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মোস্তাক ইসলাম পিন্টু, র্যাব-৫ রাজশাহীর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহবুব আলম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ক্যাম্প কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার মোবাশ্বের রহিম, সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার ওয়ালিউল ইসলামসহ আরও স্থানীয় কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতাকে।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ছাত্রদল কর্মী মিলনকে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি আব্দুল ওদুদ এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের যোগসাজশে ২০১৫ সালের ১৯ নভেম্বর বৃহস্পতিবার বাড়ি থেকে র্যাব ও ডিবি পুলিশ সদস্য পরিচয়ে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়। পরবর্তীতে ওই বছরের ২ ডিসেম্বর বুধবার চকআলমপুর এলাকায় একটি খালের পাশে মিলনের গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার করে স্থানীয়রা। এ সময় তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন ও ডান কানের নিচে বগলের ওপরে গুলির চিহ্ন পাওয়া যায়। মামলার প্রধান আসামিসহ অন্য আসামিরা ১৩ দিন ধরে ছাত্রদল কর্মী মিলনকে আটকে রেখে ব্যাপক নির্যাতন চালায়। পরবর্তীতে গুলি করে হত্যা করে।
এ বিষয়ে মামলার বাদী বিএনপি নেতা রহমত আলী বলেন, বিএনপি পরিবারের সন্তান হওয়ায় ও ছাত্রদল করায় মিলনকে তুলে নিয়ে গিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। হত্যাকান্ডের সময়ে মিলন কৃষ্ণগোবিন্দপুর ডিগ্রী কলেজের ইন্টার প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিল। বিনা অপরাধে একজন কলেজ ছাত্রকে তুলে নিয়ে গিয়ে তারা নির্যাতন করে গুলি চালিয়ে হত্যা করেছে। হত্যাকান্ডের পর থানা ও আদালতে বারবার যোগাযোগ করা হলেও ওই সময় মামলা নেয়া হয়নি। বর্তমানে পরিস্থিতি অনুকুলে আসায় এখন মামলার আবেদন করা হয়েছে। আশা করি এর সুষ্ঠু তদন্ত হলে ন্যায় বিচার পাব।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম জাকারিয়া বলেন, মামলার আবেদন গ্রহণ করা হয়েছে। পরবর্তীতে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে পরামর্শ করে তবেই তদন্ত সাপেক্ষে মামলা গ্রহণসহ এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।