অমানবিকতার গান
লিখেছেন মহসিন আলী
পাখির ডানা কেটে নেয়া হলো,
নীল আকাশে উড়ার স্বপ্ন কেড়ে নেয়া হলো,
মানুষিক বিকারগস্ত ছিল— তাই কি?
অপরাধ কি শুধু ভিন্নতা ছিলো তার?
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোল,
যেখানে জ্ঞানের আলোর মশাল জ্বলে,
সেই আলোর ছায়ায়ই আজ আঁধার নেমে এলো,
শিক্ষার্থীরা লাঠি হাতে, বিচারবিহীন প্রহসন।
তারা ভুলে গেলো মানুষ হবার দায়,
সহানুভূতির ঋণ, ভালোবাসার উপায়,
তারা শুনলো না সেই নীরব আর্তনাদ,
অপরাধের নাম— অমানবিকতার গান।
কে জানবে কিসের জন্য ছেলেটি ছিল ক্লান্ত?
কত কান্না সে গোপনে রেখেছিল জমা?
মানুষিক ব্যাধির ভারে ন্যুব্জ জীবন,
তবুও তার মাঝে ছিল বেঁচে থাকার বাসনা।
তাকে বসানো হয় খাবার টেবিলে,
খাবারের থালা সামনে, শেষ আহার!
তবে এ আহার নয় জীবনের,
এ যে মৃত্যুদিনের উৎসব, পৈশাচিকতার ছায়ায়।
চোখে তার শূন্যতা, ভাঙা মন
মাথার উপর তাণ্ডব নেমে আসে।
আঘাতে আঘাতে জীবন যখন জ্বলছে,
পাশে দাঁড়িয়ে উল্লাস, বদ্ধ উন্মাদরা।
রক্তের স্রোতে ভেসে যায় তার গল্প,
কে জানে কী ছিল তার ভেতরে,
কে জানে কেন এমন হলো?
শুধু আকাশ জানে, তার নিঃশব্দ চিৎকার।
তবু উৎসব থামেনি, থামেনি হাত,
আরো একবার তোলা হলো তাকে,
মাটিতে ফেলে গড়া হলো মৃত্যুর মঞ্চ,
বাঁচার অধিকার হারিয়ে গেল তার সাথে।
নিপীড়ন কি উত্তর হতে পারে কোনো প্রশ্নের?
এই মৃত্যু কি দিলো শান্তি নাকি বাড়ালো ক্ষোভ?
আমরা কি শিখবো মানুষ হবার পাঠ?
নাকি হারিয়ে যাবো নীরবতার মহাসমুদ্রে?
তরুণ হারিয়ে যায়, নীরব রাতের কোলে,
ঢাবির দেয়ালে পড়ে থাকে রক্তের দাগ,
কিন্তু প্রশ্ন থাকে বাতাসে ঝুলে,
এ কোন সভ্যতার পিছুটান?
এ কোন অমানবিকতার উল্লাস?
চুপ হয়ে থাকলেও প্রশ্নগুলো থাকে,
বিচারের ভ্রান্ত পথে— মানবতার কথা।