পরিমল কুমার পরাণ : ঢাকার কেরানীগঞ্জে বোতলজাত গ্যাস বৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সিলিন্ডার বিস্ফোরণ ও দুর্ঘটনা। বাসাবাড়িতে, যানবাহনে, পথেঘাটে কিংবা কারখানায় থেমে নেই এই দুর্ঘটনা। বাড়ছে হতাহতের সংখ্যা। নিয়ম না মেনে মুদি দোকান, মুরগির দোকান, ঔষুধের দোকান, হাড়ি-পাতিল বিক্রির দোকানসহ আনাচে কানাচে বিক্রি হচ্ছে এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডার। কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়াই বিভিন্ন স্থানে রাখা হচ্ছে সিলিন্ডার বোতল।

তাছাড়া কেরানীগঞ্জে বাসাবাড়ির পাশাপাশি এখন ফুটপাতের খাবার দোকান ছাড়াও চায়ের দোকানগুলো গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করছে দেদার। এ সিলিন্ডারগুলো ব্যবহারের নেই কোনো সতর্কতা। কেউ মানছেন না নিয়ম। সবার একটায় চিন্তা, শুধু ব্যবসা। ফুটপাতগুলো মানুষের পদচারণায় ঠাসা থাকে। এর মাঝেই ফুটপাতের সাথে লাগোয়া খাবারের দোকানগুলোতে এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করা হচ্ছে। এমন কিছু দোকান আছে যেগুলোর নিত্যদিনের ব্যবহারের সিলিন্ডারগুলো ফুটপাতের উপরেই দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। এ থেকে যে কোনো মুহূর্তেই বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে পথচারীদের অভিযোগ।

এ বিষয়ে কদমতলি চা দোকানি তুহিন বলেন, কেরোসিন তেলের দাম বেশি থাকায় গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করছি। একটি সিলিন্ডারের দাম ১১৫০ টাকা। এক সপ্তাহ খুব সহজে চলা যায়। তবে এই সিলিন্ডারের কোনো ঝুঁকি আছে নাকি সেই বিষয়ে আমার জানা নেই।

মডেল টাউন এলাকার চঞ্চলা রাণী নামের এক গৃহিণী বলেন, কোন সিলিন্ডার ঝুঁকিপূর্ণ নয় আমরা তা বুঝতে পারি না। রান্না করতে প্রয়োজন হয় তাই বাধ্য হয়ে কিনি।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধি মো. রমজান আলী বলছেন, এসব এখনি না ঠেকালে ভবিষ্যতে আরও দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তিনি আরও বলেন, পাড়া মহল্লায় যত্রতত্র গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করা হয়। তাদের অধিকাংশই অনুমোদন ছাড়া এ ব্যবসা করে। এসব দোকানে অগ্নি নির্বাপণের ব্যবস্থা পর্যন্ত দেখা যায় না। এসব রুখতে এখনই কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন বলে মনে করেন এ নাগরিক নেতা।

এদিকে সংশ্নিষ্টরা বলছেন, অসচেতনতা, মানহীন ও ঝুঁকিপূর্ণ সিলিন্ডার এবং উপযুক্ত তদারকির অভাবে দুর্ঘটনা ঘটছে। তবুও সিলিন্ডারের ঝুঁকিপূর্ণ ব্যবহার ও পরিবহন থামছে না। বিশেষ করে খুচরা পর্যায়ে সিলিন্ডার বিপণন ও বিতরণে নিয়ম মানা হচ্ছে না। এতে সিলিন্ডারের স্থায়িত্ব কমছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অমিত দেবনাথ বলেন, যেসব দোকানে সনদ ছাড়া অবৈধ ও মেয়াদোত্তীর্ণ গ্যাস বিক্রি করছে সেগুলোকে আইনের আওতায় আনা হবে। শিগগিরই মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ফুটপাত সিলিন্ডার গ্যাস সরবরাহ দোকানিদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে