
আতাউর শাহ্, নওগাঁ প্রতিনিধিঃ নওগাঁ শহরের পার-নওগাঁ টিএনটি পাড়ায় আবাসিক এলাকায় ট্রাক ও সিএনজি টার্মিনাল নির্মাণের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে এলাকাবাসী। শনিবার দুপুরে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে ঘণ্টাব্যাপী এই মানববন্ধন কর্মসূচিতে এলাকার শতাধিক মানুষ অংশগ্রহণ করে। ৮নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মোফাখখারুল ইসলামের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, নওগাঁ পৌরসভার প্যানেল মেয়র সারোয়ার তানজীদ সম্রাট, ৯ নং পৌর কাউন্সিলর আসাদুজ্জামান সাগর, ৮নং পৌর কাউন্সিলর রবিউল ইসলাম রুবেলসহ, স্থানীয় বাসিন্দা মিতা খাতুন, জাভেদ হোসেন প্রমুখ।
মানববন্ধনে নওগাঁ পৌরসভার প্যানেল মেয়র সারোয়ার তানভীর সম্রাট বলেন, এটি একটি আবাসিক এলাকা। এখানে ট্রাক ও সিএনজি টার্মিনাল গড়ে তোলা হলে এলাকার পরিবেশ বিনষ্ট হবে, এখানে অনেক মানুষের সমাগম হবে। যা আবাসিক এলাকার সার্বিক পরিবেশের জন্য হুমকি স্বরুপ। গত জানুয়ারি মাসের ৭তারিখে ১৪বিঘা সরকারি জমিতে ট্রাক ও সিএনজি টার্মিনাল নির্মানের অনুমতি দেয় জেলা প্রশাসন। এর আগে এলাকার মানুষ বার বার এটার বিরোধিতা করে আসছে তবুও ট্রাক ও সিএনজি টার্মিনাল নির্মানের অনুমতি দেয়া হয়েছে। আমরা এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অবিলম্বে টার্নিমাল নির্মান বন্ধ করা হোক। প্রয়োজনে এখানে পার্ক বা কবরস্থান নির্মান করা হোক।
পৌর কাউন্সিলর রবিউল ইসলাম রুবেল বলেন, এখানে ট্রাক ও সিএনজি টার্মিনাল নির্মান অযৌক্তিক। কিভাবে জেলা প্রশাসন সরকারি জমিতে অনুমতি দিলো বুঝলাম না। এখানে সরকারি প্রায় ১৪বিঘা জমি আছে। এখানে ট্রাক ও সিএনজি টার্মিনাল নির্মানের অনুমতি বাতিল করে আব্দুল জলিল শিশু পার্ক, শেখ রাসেল শিশু পার্ক বা সরকারি কবরস্থান নির্মান করা হোক। যদি ট্রাক ও সিএনজি টার্মিনাল নির্মান বন্ধ না করা হয়, তবে আগামীতে এলাকাবাসী তীব্র আন্দোলনে নামবে।
জেলা সিএনজি শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আসিকুজ্জামান আশিক বলেন, জানুয়ারি মাসের ৭তারিখে সরকারী প্রায় ১৪ বিঘা জমি জেলা ট্রাক পরিবহন মালিক গ্রæপের কাছে হস্তান্তর করেন সাবেক জেলা প্রশাসক হারুন-অর-রশীদ। বর্তমানে মাটি ভরাট করে ট্রাক ও সিএনজি টার্মিনাল নির্মান কাজ চলছে। শহরবাসীকে যানজট থেকে মুক্তি দিতেই এমন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এখন যারা বাঁধা দিচ্ছে বা আপত্তি জানাচ্ছে তাদের হয়তো কোন অসৎ উদ্দেশ্যে আছে।
জেলা ট্রাক পরিবহন মালিক গ্রæপের সাধারণত সম্পাদক শেখ মোঃ ফরিদ উদ্দীন বলেন, শহরের ভিতর দিয়ে যে প্রধান রাস্তা তা অনেক ছোট। আর এই জন্য শহরে অনেক যানজট দেখা যায়। শহরের মধ্যে কোন টার্মিনাল না থাকায় রাস্তার ধারে ট্রাক ও সিএনজি সহ অন্যান্য যানবাহন রাখার জন্য যানজটের সৃষ্টি হয়। আর এ টার্মিনালটি চালু হলে শহরের যানজট অনেকটাই কমে যাবে। যার কারনেই জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদের ১৪বিঘা সরকারি জমিতে ট্রাক ও সিএনজি টার্মিনাল নির্মানের জন্য জমি দেয়া হয়েছে। এখন গুটিকয়েক মানুষ কেন আপত্তি জানাচ্ছে তা বুঝলাম না। শুধু আমাদের সুবিধার জন্য নয়, শহরবাসী যাতে যানজট থেকে মুক্তি পায় তার জন্য টার্মিনাল নির্মান করা হচ্ছে। যেহতু আমাদের জায়গাটি হস্থান্তর করা হয়েছে যার কারনে আমরা টার্মিনাল নির্মান করছি।
নওগাঁর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মিল্টন চন্দ্র রায় জানান, গত জানুয়ারি মাসের শুরুতে পার-নওগাঁ টি এ্যান্ড টি অফিসের পাশে সরকারী প্রায় ১৪ বিঘা জমি জেলা ট্রাক পরিবহন মালিক গ্রæপের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। শহরের যানজট নিরসনে এমন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এর আগে স্থানীয় এলাকাবাসী ও জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়েই জায়গাটি হস্তান্তর করা হয়। সে সময় তো এলাকাবাসীর কোন বাঁধা বা আপত্তি ছিল না। এখন যদি এলাকাবাসীর আপত্তি থাকে তাহলে আমাদের লিখিতভাবে জানালে পরবর্তী কি প্রদক্ষেপ নেয়া যায়, সে বিষয়ে আলোচনা করে সিন্ধান্ত নেয়া হবে।