মধুপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলের মধুপুরে উপজেলা নির্বাচন অফিসারের বিরুদ্ধে সীমাহীন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। মধুপুর কম্পিউটার এসোসিয়েশন এর সভাপতি ও সম্পাদকের লিখিত অভিযোগের বিবরণী থেকে জানা যায়, মধুপুর কম্পিউটার এসোসিয়েশন, মধুপুর, টাংগাইল ও মধুপুর পৌরসভার কম্পিউটার ব্যবসায়ীরা জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধনসহ সকল প্রকার অনলাইন কার্যক্রম সম্পন্ন করার মাধ্যমে জনগনের সেবা প্রদান করে থাকে। ব্যক্তির জাতীয় পরিচয় পত্রের নামের বানান সংশোধন ‘‘নির্বাচন অফিসে ‘ক’ ক্যাটাগরির’’ আওতায় থাকে। যা সংশোধন করতে সর্বোচ্চ ১৫ থেকে ২০ দিন সময় লাগে। কিন্তু মধুপুর উপজেলা নির্বাচন অফিসার খন্দকার মোহাম্মদ আলী বিভিন্ন কম্পিউটার থেকে অনলাইনে কারেকশনের আবেদন করলে সেই আবেদনগুলো অনুমোদন দিতে গড়িমশি করে এবং মাসের পর মাস ঝুলিয়ে রেখে জনগনকে হয়রানি করে আর বলে যে ‘আবেদন সঠিক হয় নাই’। এ ব্যাপারে অত্র এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে নির্বাচন অফিসে গিয়ে খন্দকার মোহাম্মদ আলীকে বার বার সতর্ক করা হয়েছে বলেও অভিযোগে উল্লেখ আছে।
অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয়, নির্বাচন অফিসার খন্দকার মোহাম্মদ আলী বেশী অংকের টাকা চুক্তি করে নির্ধারিত একটি দোকান থেকে কাজ করিয়ে দেয়। যেখানে বানান ভুলের সংশোধনের জন্য সরকারী ফি ২৩০/- টাকা ৩৫০/- এবং অনলাইনসহ ৪৫০/- টাকায় একজন গ্রাহকের জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন সম্ভব, সেখানে নির্বাচন অফিসার ১৫০০/- টাকা থেকে ২০০০/- টাকা এবং বিভিন্ন কৌশলে যেমন- হবে না, ঢাকা যেতে হবে ইত্যাদি হামকি দামকি দিয়ে দশ থেকে বিশ হাজার টাকা পর্যন্ত নিতেছেন। যার ফলে বিশেষ করে অসহায় অশিক্ষিত গরীব মানুষগুলো চরম বিপাকে পরতেছেন। কম্পিউটার এসোসিয়েশন অভিযোগ করে বলেন যে ‘আপনাদের এ কেমন নীতি’ কেউ আপনারা ৪০০/- থেকে ৫০০/- টাকায় বানান সংশোধন এর আবেদন করে দেন, আবার কেউ ২০০০/- টাকা নিয়ে আবেদন করেন, বিষয়টি বুঝতে পারলাম না। তখন আমরা তাকে প্রশ্ন করি, কে বেশী টাকা নিতেছে, ঐ গ্রাহকগণ কম্পিউটার এসোসিয়েশনকে জানান যে, নির্বাচন অফিসার ১টি স্লিপ দিয়ে বলে যে সামনে ‘অনুপম কম্পিউটার’ আছে ঐখানে যান। তাড়াতাড়ি ঠিক করে দিবে। ঐখানে পনেরশত টাকা থেকে দুই হাজার টাকা এমনকি কোন কোন ক্ষেত্রে দশ থেকে বিশ হাজার টাকা পর্যন্ত নিতেছে’।
এ ব্যাপারে কম্পিউটার এসোসিয়েশনের সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, দোকানের মাধ্যমে গ্রাহকদের নিকট থেকে কাজ পাঠিয়ে সারাদিন অতিরিক্ত ফি আদায় করে এবং দিনে শেষে রাতের বেলায় স্লিপ হিসাব করে নির্বাচন অফিসার কমিশন নেয়। ‘কম্পিউটার এসোসিয়েশন’ কর্তৃক আরও গভীর ভাবে তদন্ত করে প্রতিয়মান হয় যে নির্বাচন অফিসার মোহাম্মদ আলী এবং তার কর্মচারী ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মেহেরুল হক প্রতিনিয়ত হাজার হাজার টাকার দুর্নীতি করিতেছে। মেহেরুল হক নেত্রীস্থানীয় লোকদের অযুহাত দিয়ে প্রকাশ্যে দূর্নীতির আশ্রয় গ্রহণ করে সাধারণ মানুষদের হয়রানি করতেছে। আমাদের কম্পিউটার এসোসিয়েশনের সদস্যরা এ ব্যাপারে প্রতিবাদ করলে তাদের সাথে খারাপ আচরণ করে। নির্বাচন অফিসার খন্দকার মোহাম্মদ আলী প্রতিদিন ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা এবং ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মেহেরুল হক ৩ থেকে ৫ হাজার টাকা অসৎ ভাবে হাতিয়ে নিচ্ছে। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী গ্রাহকদের যথাযথ প্রমাণ রয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
এ ব্যাপারে মধুপুর কম্পিউটার এসোসিয়েশন এর পক্ষ থেকে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন সচিবালয় এর সচিব বরাবর এবং টাঙ্গাইল জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা বরাবর মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বলে জানান কম্পিউটার এসোসিয়শনের সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক তালুকদার।
এব্যাপারে উপজেলা নির্বাচন অফিসার খন্দকার মোহাম্মদ আলীর সাথে কথা বললে তিনি জানান আমার বিরুদ্ধে কম্পিউটার এসোসিয়েশনের আনা অভিযোগ সঠিক নয়। আমি মাঝে মধ্যে বলে থাকি অনু পমে যান তাদের কাজের মান ভাল। তিনি আরও বলেন সরকারী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে লাগলে তাদের পরিনতি ভাল হয়না।
টাঙ্গাইল জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা কামরুল হাসান এর সহিত মুঠো ফোনে কথা বললে তিনি জানান আমি মধুপুর উপজেলা কম্পিউটার এসোসিয়শনের একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এব্যাপারে তদন্ত পুর্বক প্রয়োজনীয় ব্যাস্হা নেয়া হবে।