মোহনপুর প্রতিনিধি ঃ রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলায় পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়াই চলছে ইটভাটা। ভাটায় ইট প্রস্তুত করতে ব্যবহার করছেন তিন ফসলি জমির অবৈধভাবে খনন করা মাটি। আর সেই মাটির তৈরি ইট পোড়াতে ব্যবহার করা হচ্ছে অবৈধ জ্বালানি কাঠ। এসবকিছুই অবৈধ ভাবে চললেও এবার নতুন করে বসিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ স’ মিল। সেখানে আরেক নতুন অবৈধ মাত্রা যোগ করেছেন ভাটা মালিকরা।
সোমবার (১১ এপ্রিল) দুপুরে সরেজমিনে উপজেলার ঘাসিগ্রাম হিন্দুপাড়ার পাশে ফসলি জমিতে ইটভাটায় ভ্রাম্যমাণ স’ মিলের এমন দৃশ্য দেখা গেছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অবৈধ ইট ভাটার মালিক কেশরহাট পৌর যুবলীগের আহবায়ক ও নব্য-যুবলীগ নেতা আতিকুর রহমান ও তার বড় ভাই । এক্ষেত্রে আরও এক ধাপ এগিয়ে রয়েছেন তারা। সেখানে বড় বড় গাছের গুল চিরে ফেলা হচ্ছে ভাটায় স্থাপিত ভ্রাম্যমাণ স’মিলে।
ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০১৩ অনুযায়ী ইট পোড়াতে কোন জ্বালানি কাঠ ব্যবহার করা যাবে না। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে পরিবেশবান্ধব ইটভাটা স্থাপন করার কথা থাকলেও সনাতন পদ্ধতিতেই এখনো ইট প্রস্তুত করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
ইটভাটায় ঘুরে দেখা গেছে, ইট পোড়াতে বড় বড় গাছের গুল জড়ো করা হয়েছে। ভাটায় কর্মরত এক শ্রমিক বলেন, প্রতি চার লাখ ইট প্রস্তুত করতে ২০ থেকে ২২ দিন সময় লাগে। এতে প্রায় ৩৫ হাজার মণ কাঠ জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। আগে দূর থেকে কাঠ চিরে আনা হতো। এতে সময় এবং অর্থ বেশি ব্যয় হতো। যে কারণে ভাটার মালিক নিজেই এক করাত বিশিষ্ট স’মিল স্থাপন করেছেন।
এ বিষয়ে ভাটার মালিক নব্য- যুবলীগ নেতা আতিকুর রহমানের বড় ভাই একরামুল হোসেন বলেন, তাদের মালিকানাধীন ভাটাই গুল ও বাশের মুতা ফাড়তে ভ্রাম্যমাণ স’মিল বসানো হয়েছে। তবে তা আগামী বৃহস্পতিবার তুলে নিয়ে আসা হবে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ফসলি জমিতে ইটভাটা স্থাপন করায় ফসলসহ মৌসুমি ফলের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। ফসল ও মৌসুমি ফল রক্ষার জন্য অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
মোহনপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. সানওয়ার হোসেন বলেন, অতিদ্রুত ইটভাটায় অভিযান চালিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।