আলেক উদ্দীন দেওয়ান, স্টাফ রিপোর্টারঃ চাঁপাই নবাবগঞ্জে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) নেই। এতে মামলাজটে পড়ে বিলম্বিত হচ্ছে নারী ও শিশু নির্যাতন মামলার বিচারকাজ। এরই মধ্যে এই ট্রাইব্যুনালে জমে গেছে অসংখ্য মামলা। দ্রুত বিচার পাওয়ার আশা নিয়ে রীতিমতো হতাশ বিচারপ্রার্থীরা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন- নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর নিয়োগের বিষয়টি আইন মন্ত্রণালয়ে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আদালত সূত্র জানায়, ২০২১ সালের শুরুর দিকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। নিয়োগ দেয়া হয় বিচারক। তবে এক বছরেও এ ট্রাইব্যুনালের জন্য পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) নিয়োগ দেয়া হয়নি।
ফলে স্থবির হয়ে পড়েছে বিচারিক কার্যক্রম। দ্রুততম সময়ের মধ্যে চাঁপাই নবাবগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে পিপি নিয়োগ দেয়ার দাবি জানিয়েছেন আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীরা। জানা গেছে, নারী ও শিশু নির্যাতনমূলক অপরাধ দমনে ২০০০ সালে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনটি প্রণয়ন করা হয়। ২০০৩ সালে এই আইন আরো সংশোধন করে যুগপোযোগী করা হয়। এই আইনে যেসব অপরাধের বিচার হয় এর মধ্যে রয়েছে- যৌতুক, এসিড নিক্ষেপ, নারী বা শিশু পাচার, নারী ও শিশু অপহরণ, ধর্ষণ, ধর্ষণজনিত মৃত্যু, নারীর আত্মহত্যায় প্ররোচনা, যৌন নিপীড়ন, ভিক্ষাবৃত্তি ইত্যাদির উদ্দেশ্যে শিশুর অঙ্গহানী প্রভৃতি।
সরজমিন দেখা গেছে, জেলা আইনজীবী সমিতি ভবনের উত্তর পাশে পুরাতন জেলা ও দায়রা জজ আদালত ভবন-২ এর ২য় তলায় অবস্থিত চাঁপাই নবাবগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অলস সময় পার করছেন। পিপি না থাকায় মামলার স্বাভাবিক কার্যক্রম চলছে না। আইনজীবীরা বলছেন, আইনের বিধান অনুযায়ী নারী ও শিশু নির্যাতন মামলার বিচার ১৮০ দিনের (ছয় মাস) শেষ করার কথা। তদন্তের ক্ষেত্রেও এ ধরনের বিধান রয়েছে। তা সত্ত্বেও এ ধারায় দায়েরকৃত মামলাগুলো যথাসময়ে প্রসিকিউট হচ্ছে না। এ আদালতে মামলা বিলিম্বিত হওয়ার পেছনে অন্যতম কারণ হচ্ছে সরকারপক্ষের আইনজীবী হিসেবে পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) না থাকা।
চাঁপাই নবাবগঞ্জ জেলা জজ আদালতে আইনজীবী ড. মো. তসিকুল ইসলাম বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল গঠনের শুরু থেকেই পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) নেই। বিচারপ্রার্থীরা এখন বিপত্তিতে পড়েছেন। বিচারপ্রার্থীদের কাছে আমাদেরও জবাবদিহি করতে হচ্ছে। এই আদালতে পিপি নিয়োগ জরুরি হয়ে পড়েছে। এ প্রসঙ্গে চাঁপাই নবাবগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট জবদুল হক জানান, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল গঠন হলেও এ আদালতে পদায়ন হয়নি স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর। পিপি না থাকায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। তিনি আরও বলেন, বেশ কয়েকজন আইনজীবী এ আদালতের পিপি হিসেবে নিয়োগ পেতে আইন মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছেন। পিপি নিয়োগের বিষয়টি আইন মন্ত্রণালয়ে প্রক্রিয়াধিন রয়েছে। মন্ত্রণালয়ে গিয়ে এ বিষয়ে কথা বলবো।