নাঈম হোসেনঃ রাজশাহীতে ঔষুধ দোকানিকে মারধর ও মামলার প্রতিবাদে বাংলাদেশ কেমিস্ট এন্ড ড্রাগিষ্ট সমিতির পক্ষে সকল প্রকার ঔষুধ বিক্রি বন্ধ করা হয়েছে। ১ ঘন্টার জন্য সকল ওষুধের দোকান বন্ধ করেন মালিক ও কর্মচারীরা। এ সময় নেতারা অতি দ্রুত কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে পরবর্তী পদক্ষেপ আরও কঠোর হবে বলে হুশিয়ারি দেন।
মঙ্গলবার ১২ এপ্রিল বেলা ১২ টার দিকে নগরীর লক্ষ্মীপুর মোড়ের সকল দোকান বন্ধ করে দেওয়া হয়। জানা যায়, গত ১০ এপ্রিল বেলা ৩ টার দিকে আস্থা ফার্মেসী মালিক ও কর্মচারীদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন ঐ ক্রেতা। এক পর্যায়ে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন উভয় পক্ষ। পরে ক্রেতার পক্ষে কয়েকজনকে ডেকে দোকানের ভিতর প্রবেশ করে দোকান মালিক ও কর্মচারীকে মারধর করা হয়েছে বলে ভিডিও ফুটেজ সুত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
মারধরের ঘটনায় জড়িতরা হলেন, নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানাধীন উপশহর এলাকার লকিয়তুল্লাহ খানের ছেলে আলতাফ হোসেন খান (৩০), তার স্ত্রী পিয়তি বেগম (২৪), শ্যালক নগরীর চন্দ্রিমা থানাধীন শিরোইল কলোনী এলাকার সাকাবল আলীর ছেলে সৌরভ (১৯) এবং তার মা আফরোজা খান হেলেন (৫০)।
তবে পত্রিকায় দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আফরোজা হেলেন বলেন, ওষুধের দাম বেশি চাওয়ার প্রতিবাদ করায় তিনিসহ তার ছেলে ও ছেলের স্ত্রীকে মারধর করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেছেন রোববার বিকেলে তার ছেলে আলতাফ ও ছেলের বউ চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা শেষে প্রেসিক্রিপসন নিয়ে লক্ষীপুর মোড়স্থ আস্থা ফার্মেসীতে ওষুধ কিনতে যান। এ সময় ফার্মেসীর মালিক বাবু প্রেসক্রিপসন দেখে ওষুধের দাম ১ হাজার ১০০ টাকা লাগবে বলে জানান। তখন তার ছেলে আলতাফ ফার্মেসীর মালিককে জানান, এ ওষুধ এর আগে তিনি ৯০০ টাকা দিয়ে কিনেছেন। তাই অন্য দোকান দেখে ঔষুধ কিনবেন বলে অন্য ফার্মেসীতে যান।
অন্য দোকানে ঔষুধ কিনতে গেলে বাবু গালাগালি দেওয়া শুরু করে ও বলে ওষুধ কিনতে আসেনি শুধু ঘুরে বেড়াতে এসেছে। অন্য ফার্মেসীতে একই ওষুধ আলতাফ ৯০০ টাকা দিয়ে কিনে নেন। এ সময় ফার্মেসীর মালিক বাবু চড়াও হয়ে আরো গালিগালাজ দিতে শুরু করেন। এ সময় তার ছেলে আলতাফ গালি দিতে নিষেধ করলে বাবু আরো অশালীন গালিগালাজ দেওয়া শুরু করে। তার ছেলের বউ পিয়তি স্বামীকে গালিগালাজ দিতে দেখে প্রতিবাদ করলে তাকে অশ্লীল গালি দিয়ে বাবু তাকে থাপ্পড় মারে। স্ত্রীকে মারতে দেখে তার ছেলে আবার নিষেধ করলে বাবু ও তার কর্মচারীরা ছেলে ও ছেলের বউকে মারধর করে। এতে নিরুপায় হয়ে তার ছেলে শ্যালক ও তাকে ফোনে বিষয়টি জানান। পরে সেখানে আমি ও ছেলে শ্যালক গেলে আমাদেরও মারধর করা হয়।
তিনি আরও বলেছেন এ ঘটনায় তারা আইনগত ব্যবস্থা নিবেন।
এ বিষয়ে লক্ষীপুর পুলিশ বক্সের ইনচার্জ টিএসআই আজাদ বলেন, ঔষুধ দোকান মালিকরা ১ ঘন্টার জন্য ওষুধ বিক্রি বন্ধ রেখেছিলো। এখন সব দোকান খোলা আছে। এর বেশি কিছু বলতে পারবো না। ওসি স্যারের সঙ্গে কথা বলেন।
এ বিষয়ে রাজপাড়া থানার ওসি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ঔষুধ বিক্রি বন্ধের কথা শুনেছিলাম পরে গিয়ে দেখি সব স্বাভাবিক। তবে উক্ত ঘটনায় পূর্বেই ঔষুধ দোকান মালিকদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মালিক পক্ষ একটি অভিযোগ দিয়েছে। সেটাও তদন্ত করা হচ্ছে।