তানোর প্রতিনিধি: রাজশাহীর তানোরে জাতীয় অর্থনীতি পত্রিকার রাজশাহী প্রতিনিধি আবুল কাশেম বাবুর উপর সন্ত্রাসী হামলার নয় দিন অতিবাহিত হলেও হামলা কারীকে গ্রেফতার করা হয় নি।এতে করে উপজেলার সাংবাদিক মহলে বিরাজ করছে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ। সেই সাথে সন্ত্রাসী আলমগীর কে দ্রুত গ্রেফতার করা না হলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে বলেও জানান মডেল প্রেস ক্লাবের সভাপতি সম্পাদকসহ সাংবাদিকরা। এতদিনেও গ্রেফতার না হওয়ায় পুলিশের ভুমিকা নিয়েও উঠেছে নানা প্রশ্ন। কারন পুলিশ যদি মনে করে নিমিষেই অপরাধী কে গ্রেফতার করা সম্ভব। এদিকে নয় দিন ধরে সাংবাদিক আবুল কাশেম হাসপাতালে চিকিৎসা ধীন রয়েছেন। আবার মঙ্গলবার তার স্ত্রীর ডেলিভারির দিন রয়েছে বলেও নিশ্চিত করেন তিনি । ফলে চরম মানবেতর জীবন যাপন করছেন সাংবাদিক আবুল কাশেম বাবুর পরিবার।
জানা গেছে, রোজার প্রথম দিনে ইফতার কিনতে এশে উপজেলার কামারগাঁ ইউপির কামারগাঁ শ্রীখন্ডা মোড়ের ঔষধ ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন ও তার স্ত্রী সংরক্ষিত ইউপি সদস্য বেলি খাতুন অতর্কিত হামলা করে মাথা ফাটিয়ে দেয় সাংবাদিক আবুল কাশেমের। এঘটনায় পরের দিন সাংবাদিক বাদি হয়ে আলমগীর ও তার স্ত্রীর নাম উল্লেখ সহ ২/৩ জনকে অজ্ঞাত করে মামলা দায়ের করেন।কিন্তু মামলার পর পুলিশ এখনো কোন আসামিকে গ্রেফতার করতে পারেন নি ।
স্হানীয়রা জানান,একজন সাংবাদিক কে অন্যায় ভাবে মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার ঘটনায় মামলা দায়ের হলেও রহস্য জনক কারনে প্রাথমিক অবস্থায় পুলিশ তেমন গুরুত্ব দেয়নি।কয়েকদিন আগে আলমগীর এলাকায় ছিলেন।তখন পুলিশ ইচ্ছে করলে গ্রেফতার করতে পারত। কিন্তু যখন আলমগীর এলাকা ছাড়া তখন তার বাড়িতে লোক দেখানো অভিযান দেওয়া হচ্ছে। আসলে কিছুই বলার নেই।
মডেল প্রেস ক্লাবের সভাপতি সম্পাদক ছাড়াও সাংবাদিকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমাদের ক্লাবের সহসভাপতি আবুল কাশেম বাবুর উপর অন্যায় ভাবে সন্ত্রাসী আলমগীর ধারালো অস্ত্র দিয়ে যে ভাবে মাথায় আঘাত করে ক্ষত করেছে সেই সন্ত্রাসী আলমগীর কে গ্রেফতার করতে পুলিশের কেন অনিহা ছিল । নয়দিন অতিবাহিত হলেও আসামী গ্রেফতার না হওয়া অত্যান্ত দুঃখজনক। আমরা কোন কর্মসূচি দেওয়ার আগে আলমগীরসহ জড়িতদের গ্রেফতার করার জোর দাবি জানান। আর আলমগীরসহ জড়িতদের দুএক দিনের মধ্যে গ্রেফতার করা না হলে মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচী ঘোষণা করা হবে।
আরো হুশিয়ারি দিয়ে বলেন, সাংবাদিক সমাজ সবাই এক। কারো উপরে অন্যায় ভাবে হামলা হলে আন্দোলনেও ঐক্যবদ্ধ। যদি কেউ মনে করে থাকেন তানোরে সাংবাদিকরা ঐক্যবদ্ধ না তাহলে বড় ভুল করবেন। আমরা যারা কলম যোদ্ধা তারা ঐক্যবদ্ধ এক সৈনিক । আবার কেউ যদি মনে করে থাকেন আবুল কাশেম বাবুর উপর হামলা হয়েছে আমরা প্রতিবাদ করব না, তাহলে আরেক ভুল, কারন আপনার উপরও এমন কিছু হবে না কে বলবে। অন্যায়ের প্রতিবাদে সবাইকে এক হয়ে কাজ করারও আহবান জানানো হয় ।
প্রসঙ্গত ঃঃ আহত সাংবাদিক আবুল কাশেম বাবুর উপর তার নিজ গ্রাম কামারগাঁ শ্রীখন্ডা মোড়ে প্রকাশ্যে হামলা করা হয় । সে প্রথম রোজার দিন ৩রা এপ্রিল রোববার শ্রীখন্ডা মোড়ে ইফতার কিনতে আসা মাত্রই ওই মোড়ের ঔষধ ব্যবসায়ী আলমগীর ও তার স্ত্রী ইউপি সদস্য যুব মহিলা লীগের নেত্রী বেলু খাতুন অতর্কিত হামলা চালিয়ে রোজাদার সাংবাদিক কাশেমের মাথা ফাটিয়ে দেয়। তার মাথার এতই ক্ষত হয়েছে বিশটির মত সেলায় দেওয় লেগেছে। এঘটনার পরের দিন কাশেম বাদী হয়ে আলমগীর ও তার স্ত্রীর নাম উল্লেখ এবং ২/৩ জনকে অজ্ঞাত করে মামলা দায়ের করেন।
হামলায় সাংবাদিক কে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।তিনি গত শুক্রবার চিকিৎসকের পরামর্শে রাজশাহীতে গিয়ে মাথার সিটি স্ক্যান করান। ওই দিন থেকে এখন পর্যন্ত তিনি চিকিৎসা ধীন রয়েছেন।
আসামী আলমগীর হোসেন কে গ্রেফতার না করায় তিনি ফেসবুক লাইভে এসে সব কিছু খোলাসা করেন। গ্রেফতার না করায় চরম ক্ষোভও প্রকাশ করে বলেন আমার স্ত্রীর ডেলিভারি দিন দেওয়া হয়েছে মঙ্গলবারে। আমি হাসপাতালে আর পরিবারের এমন করুন অবস্থা, ভাষায় প্রকাশ করার মত না। আমি কি এমন অন্যায় করেছিলাম যে আলমগীর আমার উপর রোজা থাকা অবস্থায় এভাবে মাথা ক্ষত করে দিয়েছে। আমার বড় ছেলে এসএসসি পরিক্ষা দিবে, আর একজনের বয়স আট বছর। স্ত্রীর বাচ্চা প্রসবের দিন রয়েছে মঙ্গলবারে , কি কষ্টে দিন পার করছি বলতে পারব না। আমি কোন ধনাঢ্য ঘরের সন্তানও নানা। সবকিছু কেমন যেন তালমাতাল হয়ে গেল। রোজাও করতে পারলাম না। সামনে পাব কিনা কে যানে। জীবনটাই তো সংকীর্ণ হয়ে পড়েছে।
তিনি সাংবাদিক সহ সকলের কাছে রোগ মুক্তি চেয়ে দোয়া চান।
অবশ্য মামলার আইও এসআই আক্তার জানান, আলমগীরের বাড়িসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালানো হয়েছে। তিনি গা ঢাকা দিয়েছে। তার স্ত্রী সংরক্ষিত ইউপি সদস্য বেলি খাতুন আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন।