তানোর প্রতিনিধিঃ দ্বিতীয় ধাপে আসন্ন রাজশাহীর তানোর উপজেলার কলমা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আ”লীগের দলীয় মনোনায়ন না পেয়ে এক প্রকার বাধ্য এবং তৃণমূল নেতাকর্মীদের চাপের মুখে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনায়ন উত্তোলন করেছেন জেলা আ”লীগের সদস্য উপজেলা আ”লীগের সিনিয়র সহসভাপতি খাদেমুন নবী বাবু চৌধুরী। তিনি গত রোববার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনায়ন ফরম তুলে ভোট করবেন বলে নিশ্চিত করেন।ফরম উত্তোলনের পর থেকে তাকে ঘিরেই সাংসদ শিবিরে চলছে নানান আলোচনা। যত বাধা দল থেকে বহিষ্কার যা খুশি হয়ে যাক তারপরও ভোটের মাঠেই থাকবেন বর্ষীয়ান প্রবীণ এই আ”লীগ নেতা। কারন তাকে দলীয় মনোনায়ন দেওয়া হবে এমন আশ্বাসে তাকেই সামনে রেখে নানা রাজনৈতিক খেলা হয়েছে উপজেলায় এবং তাকে দিয়েই অপর পক্ষের বিরুদ্ধে কেন্দ্রেও নানান অভিযোগ করা হয়েছে। কিন্তু রহস্যজনক কারনে দেওয়া হয়নি মনোনায়ন। তিনি ফরম উত্তোলন করায় তৃনমূল ও সাধারন ভোটারদের মাঝে দেখা দিয়েছে আনন্দ উচ্ছ্বাস। কলমা ইউপি নির্বাচনে মনোনায়ন পেয়েছেন ২০১৯ সালের উপ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান ইউপি আ”লীগ সভাপতি মাইনুল ইসলাম স্বপন। তিনি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে নানা অনিয়ম দুর্নীতি একক আধিপত্যের কারনে এক প্রকার জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন।
জানা গেছে, উপজেলায় আ”লীগের রাজনীতি দু ভাগে বিভক্ত। এক পক্ষের নেতৃত্বে সাংসদের অনুসারী সিনিয়র আ”লীগ নেতা বাবু চৌধুরী ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান উপজেলা যুবলীগের সভাপতি লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না। অপর পক্ষে উপজেলা আ”লীগের সভাপতি গোলাম রাব্বানী ও সাধারন সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন। গত ২৮সেপ্টেম্বর শুক্রবার বিকেলের দিকে ইউপি নির্বাচনে আগ্রহী প্রার্থীদের নাম জমা দেওয়ার সভায় দু পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও মারপিটের মত ঘটনাও ঘটে। ওই সভায় সাংসদের অনুসারীরা নামের তালিকা দিতে পারলেও অপর পক্ষ দিতে পারেনি। তবে তারা যে কোন ভাবে নামের তালিকা পাঠিয়েছিল এবং দলীয় মনোনায়নও কিনেছিলেন।দলীয় মনোনায়ন পান সাংসদ অনুসারীরাই। শুধু তানোরে না গোদাগাড়ীতেও তার অনুসারীরাই পেয়েছেন দলীয় প্রতীক নৌকা।
দলীয় সুত্র জানায়, বাবু চৌধুরীকে সামনে রেখে সব ধরনের সভা সমাবেশ করা হয়েছে এবং তাকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল দলীয় মনোনায়ন দেওয়া হবে। কিন্তু কেন তারমত ব্যক্তিকে না দিয়ে জনবিচ্ছিন্ন ইউপি সভাপতিকে দেওয়া হয়েছে বুঝে আসছেনা।
সিনিয়র আ”লীগ নেতা বাবু চৌধুরী ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান আমার একটা অপরাধ দেখিয়ে বলুক যে এই কারনে দলীয় মনোনায়ন দেওয়া হল না। আমাকে দিয়ে যাবতীয় সব কিছু করিয়ে নিয়ে ছিটকে ফেলছে এটা কোন অমানবিক আচরণ। আমার বয়স হয়ে গেছে জীবনের শেষ নির্বাচন বলে মনোনায়নের দাবি তুলেছিলাম। কিন্তু সেখানেও ধাক্কা, এর চেয়ে দুঃখের আর কি হতে পারে। আমাকে যদি দলীয় মনোনায়ন নাই দেওয়া হবে তাহলে কেন আমাকে নাম দিতে বলা হয়েছিল এবং ঢাকায় গিয়ে দলীয় ফরম কিনতে বলা হল। সব কিছুতে ধাপ্পাবাজি চলে না। সে দিনের মারামারির ঘটনায় আমাকে বাদি করে থানায় অভিযোগ করানো হয়েছে, আমিও সাব জানিয়ে দিয়েছি অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিব। এদের দ্বারা সব কিছু সম্ভব, নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য সব করতে পারে। যারা আমার মত প্রবীণ ব্যক্তির সাথে এমন আচরণ করতে পারে তাদের দ্বারা সব কিছুই সম্ভব।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার কারনে আপনাকে যদি দল থেকে বহিষ্কার করে সে ক্ষেত্রে কি করবেন জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান আমি সেই সুযোগ দিব না প্রয়োজনে দলীয় পদ থেকে পদত্যাগ করব। কিন্তু যাই হয়ে যাক ভোটের মাঠে থাকবই।
তফসীল অনুযায়ী, আগামী ১৭ অক্টোবর মনোনায়ন ফরম জমার শেষ দিন, ২০ অক্টোবর বাছাই, ২৬ অক্টোবর প্রত্যাহার এবং আগামী ১১ নভেম্বর সাত ইউনিয়নের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।