নিজস্ব প্রতিনিধি ঃ যুবলীগ নেতা ইসমাইল হোসেন সম্রাটের শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া হবে কি না বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানিয়েছে বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ।
বুধবার ইসমাইল হোসেন সম্রাটের শারীরিক অবস্থা নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বিএসএমএমইউর পরিচালক (হাসপাতাল) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নজরুল ইসলাম খান বলেন, ওনার শারীরিক অবস্থা বোর্ড দেখে সিদ্ধান্ত নেবে, যে এই মুহূর্তে ছাড়া যাবে কি যাবে না। এতদিন ওনার সীমাবদ্ধতা ছিল যে অন্য কোথাও চিকিৎসা নিতে পারবেন কি না। এখন ওনার পরিবার সিদ্ধান্ত নিতে পারে যে তাকে অন্য কোথাও চিকিৎসার প্রয়োজন আছে কি না।
বিএসএমএমইউর কার্ডিওলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. রায়হান মাসুম মণ্ডল বলেন, উনি কিছু সময় স্থিতিশীল থাকেন আবার কিছু সময় অস্থিতিশীল।
ওনার ‘সাডেন কার্ডিয়াক ডেথ’ সিনড্রোম আছে। এর সঙ্গে ওনার ভাল্ব রিপ্লেসমেন্ট আছে। উনি যখন প্রথম এখানে চিকিৎসা নিতে আসেন ওনার হৃদস্পন্দন এলোমেলো ছিল। ওনার সর্বোপরি অবস্থা এমন যে দূর থেকে দেখলে মনে হবে একজন সুস্থ মানুষ বসে আছে। কিন্তু একজন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ হিসেবে যখন দেখবেন, তখন দেখা যাবে যে তিনি তার হার্টের ভেতরে একটি এটম বোম নিয়ে বসে আছেন। যেটি স্বাভাবিকই থাকে, কিন্তু একটু এলোমেলো হলে ওনার মৃত্যু নিশ্চিত। যতক্ষণ তার জটিলতাগুলো ঠিক না হচ্ছে তার এমন জায়গায় থাকতে হবে যে দ্রুত সিসিইউ কিংবা কার্ডিওলজিস্টের শরণাপন্ন হওয়া যায়।
তিনি আরও বলেন, উনি যতদিন জেল কর্তৃপক্ষের অধীনে ছিলেন আমরা জেল কর্তৃপক্ষকে তার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে অবগত করেছি। এখন যেহেতু তিনি জামিনে মুক্ত আছেন আমরা এখন তার পরিবারকে তার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানাব। সোমবার আমরা একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করে তার শারীরিক অবস্থা পর্যালোচনা করবো। তার অভিভাবক সিদ্ধান্ত নেবেন যে তিনি চিকিৎসা কোথায় করাবেন।
কার্ডিওলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. হারিসুল হক বলেন, দেড় বছর আগে আমরা যখন তার এনজিওগ্রাম করলাম তারপর বেডে নেয়ার পর তিনি শকে চলে গেলেন। আমরা ইনজেকশন দিয়ে তার প্রেসার উঠানোর ব্যবস্থা করলাম। তার হার্টে মেটালিক ভাল্ব আছে। তাকে তখন তিনটি দামি ইনজেকশন দেয়ার পর আমাদের মাঝে আবার ফিরে আসলেন। এরপর আবার তার এনিমিয়া ফিরে এলো।
তিনি আরও বলেন, ওনার মেটালিক ভাল্বের পরিস্থিতি কি সেটি জানতে হবে। এর জন্য ইলেকট্রফিজিওলজি স্টাডি দরকার। তার শরীরে একটি ধাতব বস্তু আছে সেখানে কারেন্ট দিয়ে দিয়ে ইলেকট্রফিজিও স্টাডি করবো। এতে আরেকটা দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এজন্য হাইলি ইকুইপমেন্ট আছে এমন জায়গায় যাওয়া ভালো। ঢাকাতে আমরা এমন জায়গা এখনও ডেভেলপড করতে পারিনি। উনি সিঙ্গাপুরের কথা বলেছেন সেটা অবশ্যই ভালো জায়গা। উনি চাইলে তার চেয়েও ভালো জায়গায় যেতে পারেন। আমরা আসলে ইলেকট্রফিজিওলজি স্টাডিতে অতটা সক্ষম না।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, সহযোগী অধ্যাপক ডা. আরিফুল ইসলাম জোয়ারদার টিটো, সহকারী পরিচালক ডা. এহসানুল কবির, ডা. এনায়েত তুষার, ডা. মোহাম্মদ কুতুব উদ্দিন প্রমুখ।