ডেস্ক নিউজ ঃ প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ পালন করতে ঢাকা ছাড়ছে ঘরমুখো মানুষ। দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের ঘরে ফেরার অপেক্ষা শুরু হয়েছে। রাজধানী থেকে অনেকেই পদ্মা পাড়ি দিতে ঘাটে হাজির হয়েছেন।

ঈদের সময় যত ঘনিয়ে আসছে, মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ফেরিঘাটে যানবাহনের চাপও ততই বাড়ছে।

শুক্রবার ভোর থেকে লৌহজং উপজেলার শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে দেখা গেছে মানুষের উপচে পড়া ভিড়। শিমুলিয়া ঘাট থেকে পদ্মা উত্তর সেতু থানা পর্যন্ত চার কিলোমিটার এলাকাজুড়ে হাজারের বেশি যানবাহন ফেরি পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে। প্রচণ্ড রোদে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা।


বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিসি) শিমুলিয়া ঘাটের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মো. ফয়সাল জানান, বর্তমানে মোট ১০টি ফেরি পারাপারে কাজ করছে। বাংলাবাজার নৌরুটে সাতটি ও মাঝিরকান্দা নৌরুটে তিনটি ফেরি চলাচল করছে। ঈদ উপলক্ষে যাত্রী পারাপারের সংখ্যা বেড়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ঘাটের পাশের মহাসড়কে গাড়ির দীর্ঘ সারি। শুক্রবার ভোর থেকেই ঢাকা থেকে ঘাটে আসতে শুরু করে যানবাহন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সারির দৈর্ঘ্য লম্বা হতে থাকে।
ফেরি সংকট ও সময়মতো ফেরি না ছাড়ায় ঝুঁকি নিয়ে লঞ্চ ও স্পিডবোটে যাতায়াত করতে দেখা যায় যাত্রীদের। এতে তাদের বাড়তি টাকাও গুনতে হচ্ছে। বাস, লেগুনা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলে করে আসা ঘরমুখো মানুষকে লঞ্চ বা স্পিডবোটে নদী পারাপার হতে দেশি দেখা গেছে।
ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে যশোর যাবেন আতাহার মোল্লা। তিনি বলেন, ‘মধ্যরাতে আগেভাগে রওনা হয়েছি। ২ ঘণ্টা ধরে ঘাটে অপেক্ষা করছি। কখন ফেরিতে উঠব আর নদী পার হতে পারব জানি না।’

কলেজছাত্র আরিফিন মোল্লা জানান, ফেরির অপেক্ষায় থাকলে দিন গড়িয়ে রাত হবে। তাই তাড়াতাড়ি বাড়ি যেতে স্পিডবোটে করে পার হবেন নদী। পরে মোটরসাইকেলে করে যাবেন শিবচরে।

নবদম্পতি নাজমুল ও তার স্ত্রী শরবত রওনা হয়েছেন ভোরে রাজধানীর মিরপুর ১০ নম্বর থেকে। বাসে করে এক ঘণ্টা ১০ মিনিটে পদ্মা সেতু উত্তর থানা পর্যন্ত আসতে পারলও বাকি চার কিলোমিটার পথ আসতে লেগেছে দেড় ঘণ্টা। এরপর ঘাটে মোটরসাইকেল আরোহীদের কারণে ঘণ্টাব্যাপী চেষ্টার পরও তারা উঠতে পারেননি ফেরিতে।

জলিল হাওলাদার দুই সন্তান ও স্ত্রী নিয়ে ভোরে রওনা হন। বাসে চড়ে পদ্মা সেতুর উত্তর থানা পর্যন্ত আসেন। এরপর ৪ কিলোমিটার হেঁটে ঘাটে এসে বিড়ম্বনায় পড়তে হয় তাদের। যাত্রীতে ঠাসা ঘাট এলাকা। লঞ্চ, সি-বোট, ফেরি কোথাও তিল ধারণের জায়গা নেই।

জলিল হাওলাদার বলেন, ‘কয়েক কিলোমিটার পথ হেঁটে ঘাটে আইসা দেখি হাজার হাজার মানুষ। কখন লঞ্চে উঠমু, বাড়িতে যামু ঠিক নাই। স্পিডবোটে যাওয়ার টাকা নাই।’

বিআইডব্লিউটিএ শিমুলিয়া ঘাটের নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী পরিচালক মো. শাহাদাত হোসেন জানান, লঞ্চ ও স্পিডবোটে যাত্রী পারাপারের সংখ্যা বেড়েছে। ফেরির জন্য দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা না করে মানুষ লঞ্চ ও স্পিডবোটে যাতায়াত করছেন। ভোর থেকে ১৫৫টি স্পিডবোট ও ৮৭টি লঞ্চ চলাচল করছে।

By admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *