মানিক হোসেন, রাজশাহী প্রতিনিধি: রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন পক্ষ থেকে পুরো শহর ঢেলে সাজানো হয়েছে। রাস্তা প্রশস্তকরণ করা হয়েছে। রাস্তায় লাল নীল আলোর ও প্রজাপতির ল্যাম্পপোষ্ট বসানো হয়েছে। শহরের ফুটপাত ও ড্রেনেজ ব্যবস্থাও অনেকটা চোখে পড়ার মত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন এবং আকর্ষণীয়। রাজশাহীর ভদ্রা মোড়ের বাস স্ট্যান্ডের পাশে অবস্থিত ড্রেনের দূর্গন্ধে অতিষ্ট সাধারণ যাত্রী ও পথচারীরা। ব্যবসায়ী , পথচারী ও যাত্রীরা কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন।
রোববার (৮ মে) রাজশাহী নগরীর ভদ্রা মোড়ের বাসট্যান্ডে দূর্গন্ধযুক্ত পানি জমে থাকতে দেখা গেছে। যার জন্য সাধারণ মানুষের চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। অতিব প্রয়োজন ছাড়া কোন মানুষ ঐ স্থানটিতে দাঁড়াতে পারছে না। এদিকে মানুষজন না থাকায় আশপাশের দোকানগুলোতে থেমে যাচ্ছে বেচাকেনা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভদ্রা বাস স্ট্যান্ডের পাশেই রয়েছে মালিকানাধীন একটি টয়লেট । কনষ্ট্রাকশন সাইটের বর্জ্য পানি প্রবাহের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে ফুটপাতের পাশের ড্রেনটি। এতে ড্রেনটির ধারণক্ষমতার থেকে বেশি চাপ পড়ছে। অন্যদিকে টয়লেটেরসহ আশেপাশের বাসা বাড়ির বর্জ্য পানির লাইন সংযুক্ত করা হয়েছে এই ড্রেনটি দিয়ে। ফলে সরু ড্র্রেনটি পরিনত হয়েছে বদ্ধ নালায়, যেহেতু ড্রেনটি এসব ভারি বর্জ্যের কারনে আবদ্ধ এবং স্রোতহীন হয়ে পড়েছে । যার ফলে, ড্রেনের পানি গুলো পানি নিষ্কাশনের পথ দিয়ে রাস্তার উপরে উঠে আসছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দোকান ব্যবসায়ীরা জানান, ড্রেনের ধার ঘেঁষে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন বিপনী বিতানসহ খাদ্য পণ্যের দোকান। টয়লেটটির পানি থেকে বের হয় প্রচন্ড দূর্গন্ধ । ফলে, যেমন শারীরিক অসুস্থতা সৃষ্টি হয় ঠিক তেমনই দোকান গুলোতে আসা ক্রেতাদের অবস্থা নাজেহাল হয়ে পড়ে। এসব বিপনী বিতান গুলোর পক্ষ থেকে একধিকবার টয়লেট মালিক, কাউন্সিলর এবং সিটি কর্পোরেশনকে অভিযোগ দেয়া হলেও এখনো মেলেনি তার সুষ্ঠুু সুরাহা।
এবিষয়ে স্থানীয় এক দোকানী রফিকুল ইসলাম জানান, রোজার মাসেও এই সমস্যা থাকলেও দোকান কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে। তবে, আশানুরূপ ব্যবসা হয়নি । এজন্য কর্মচারীদের বেতন দিতে পারেন নি। বারবার এ বিষয়ে অভিযোগ দেয়া হলেও ব্যবস্থা নেয় নি কেউ। এখানটি থেকে প্রচুর দূর্গন্ধ বের হয় এবং আমাদের নিশ্বাস নেয়াও কাল হয়ে দাড়িয়েছে।
রাত্রিকালীন রাসিকের পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা সুপারভাইজার শান্ত বলেন, প্রতিদিন আমাদের এই দূর্গন্ধের মধ্যেই কাজ করতে হয়, ড্রেনের পানি আমরা পরিস্কার করতে পারি কিন্তু কেউ যদি এতে মলমূত্র ফেলে জায়গাটি সেফটি ট্যাঙ্ক বানিয়ে ফেলে তাহলে আমাদের কিছু করার নাই?
অন্যদিকে আরেকজন ব্যবসায়ী আজিজুল আমাদের বলেন, বারবার অভিযোগ দিয়েছি তাও কেউ কোনো ব্যবস্থা নেই নি, আমরা এর কারণে খুব খারাপ অবস্থায় রয়েছি।
রাসিকের আরেকজন পরিচ্ছন্নতা কর্মীর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, এই জায়গায় আবর্জনা তোলা তো দূরে থাক, এর পাশে দিয়ে হেঁটে গেলেও প্রচুর দূর্গন্ধের মধ্যে পড়তে হয়।
এসকল বিষয় নিয়ে আমাদের সাথে কথা হয় রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের বর্জ্য ও পরিচ্ছন্ন বিভাগের হিসাব সহকারী বাহারুল আলম সাগরের সাথে তিনি জানান, বিষয়টি আমাদের জানা ছিল না । দ্রুত এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অবৈধ এসব স্যানিটারি পাইপ গুলো লাগানো বিষয়টিও তদন্ত করা হবে।
রাসিকের ২৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, একাধিকবার পরিচ্ছন্নতাকর্মী পাঠিয়ে জায়গাটি পরিস্কার করি তবে তাও কোনো কাজে আসে না। এ বিষয়টি নিয়ে সিটি কর্পোরেশনে অভিযোগ দেয়া হয়েছে। আশা করা যায়, দ্রুতই জায়গাটি পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করা হবে। ব্যক্তি মালিকানাধীন গণশৌচাগার , হোটেল ও দোকানগুলোর বর্জ্য গুলো যেন ড্রেনে না ফেলে সে বিষয়ে অবগত করা হয়ে ছিল । তবুও বিষয়টি নিয়ে কর্ণপাত করেনি তারা।