নিজস্ব প্রতিবেদকঃ রাজশাহীর শাহমখদুম থানাধীন হরিষার ডাইং এলাকায় গত সোমবার ( ১ আগস্ট ) উচ্চ শব্দে সাউন্ড বক্স বাজানোকে কেন্দ্র করে মুকুল (৪০) নামের একজনকে হত্যা করে প্রতিবেশী নাহিদ (২০) ও তার পরিবার । রবিবার ( ৭ আগস্ট ) রাজশাহীর শেফ গার্ডেন রেস্টুরেন্টে এই ঘটনার মূল আসামীদের অনতিবিলম্বে গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে সাংবাদিক সম্মেলন করেছে পরিবারের স্বজনেরা।
এসময় উপস্থিত ছিলেন নিহত মুকুলের ভাই মেন্টু, নিহতের স্ত্রী মর্জিনা বেগম, নিহতের বড় ছেলে শামিম ( ২৭) , ছোট ছেলে শাহীন (২২) , নিহতের মেয়ের জামাই আলমগীর (২৬), নিহতের স্ত্রীর ভাই মানিক মিয়া।
এ ঘটনায় নগরীর শাহ মখদুম থানায় মঙ্গলবার (২ আগস্ট) মামলা দায়ের করা হলে সকাল ৯ টা থেকে রাত ৯ টা সময়ের মধ্যে আসামী বকুল আলীর মেয়ে খাদিজা (১৯) , আসাদ আলীর ছেলে মিঠন (৩০), বাদশা মিয়ার ছেলে মোমিন (২৫), জান মোহাম্মাদের ছেলে সোহেল (৩২) ও কর্ণহার থানাধীন মৃত নজরুল ইসলামের ছেলে পলাশ (৪০) কে গ্রেফতার করে ঐ থানার পুলিশ সদস্যরা।
মূল আসামী নাহিদ, নাহিদের বাবা বকুল (৪৫), নাহিদের মা আমেনা (৪০) কে এখনো গ্রেফতার করা হয়নি বলে জানান ভুক্তভোগিরা।
স্বজনরা জানায়,এটি একটি পূর্বপরিকল্পিত হত্যাকান্ড ।
এ বিষয়টি সম্পর্কে নিহত মুকুলের স্ত্রী ও বড় ছেলে জানায়, মুকুলের ওপর যখন আঘাত করছিলো নাহিদ ও তার বাবা, সেই সময় সোহেল সেখানে উপস্থিত ছিল। সে মুকুলকে বাঁচানোর চেষ্টাও করেনি। দাড়িয়ে দাড়িয়ে দেখেছে। সেই সাথে আসামী নাহিদ ও তার বাবাকে মুকুল হত্যায় সাহায্য করেছে। অন্যদিকে পলাশ নামের আসামী হত্যা ঘটনার রাতে আসামী নাহিদ, নাহিদের বাবা, মা ও বোনকে আশ্রয় দিয়েছে। সকালে বাবা, ছেলে ও মা পালিয়ে যায়।পরে, পুলিশ সদস্যরা পলাশ ও নাহিদের বোনকে গ্রেফতার করে।
সাংবাদিক সম্মেলনে নিহতের পরিবার জানায় , বকুলের ছেলে নাহিদ গত সোমবার ( ১ আগষ্ট) রাত সাড়ে ৯ টায় উচ্চ শব্দে সাউন্ড বক্সে গান শুনছিল। এদিকে, প্রতিবেশী মুকুল আলীর মেয়ে অন্তসত্বা ও অসুস্থ হওয়ায় মুকুল আলী নাহিদের বাড়িতে গিয়ে উচ্চ শব্দে গান বাজাতে নিষেধ করে। নাহিদ তাৎক্ষণিক সাউন্ড বক্সের শব্দ কমিয়ে দিলে মুকুল সেখান থেকে চলে আসে। মুকুল ঘরে ঢুকতেই আবারও শব্দ বাড়িয়ে দেয় নাহিদ ।
মুকুল আলী পুনরায় নাহিদের বাড়িতে গিয়ে উচ্চ শব্দে গান বাজাতে নিষেধ করলে আসামি নাহিদ ও তার বাবা বকুল আলী, মা আমেনা ও তার বোন খাদিজা মিলে মুকুলকে গালিগালাজ করে। এমন সময় তাদের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক হয়। এক পর্যায়ে নাহিদ ও তার পরিবারের সদস্যরা লোহার রড দিয়ে মুকুলের মাথায় আঘাত করে এবং চাকু দিয়ে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করে গুরুত্বর জখম করে। মুকুলের চিৎকার শুনে তার ছোট ছেলে শাহীন আলম এগিয়ে আসলে তার মাথায় বাড়ি দিলে অজ্ঞাত হয়ে যায়। জামাই আলমগীর চিৎকার ছুটে আসলে মারপিট ও চাকু দিয়ে আঘাত করে জখম করে।
মকুলের ছেলে শামিম ইসলাম আরও জানায়, ঘটনাস্থলে স্থানীয় লোকজন মুকুলকে উদ্ধারে এগিয়ে গেলে আসামিরা পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে গুরুত্বর আহতবস্থায় মুকুলকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার (২ আগষ্ট) রাত সাড়ে ১২ টায় মৃত্যু বরণ করে ।
আসামী ও মামলার পরিস্থিতি সম্পর্কে শাহ মকদুম থানার এস আই শরিফুল ইসলাম জানান, প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে মামলার ৫ জন আসামীকে ধরতে সক্ষম হয়েছি।বাকী আসামীদের গ্রেফতার করতে কাজ করে যাচ্ছি।

By admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *