

ডেস্ক নিউজ ঃ দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর এবার দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোকে ৪৫ হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগ করতে যাচ্ছে সরকার।
সচিবালয়ে বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন।
শুক্রবার থেকে তিন ধাপে শিক্ষকদের এই নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান তিনি।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সহকারী শিক্ষকের ৩২ হাজার ৫৭৭টি শূণ্যপদে নিয়োগের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ২০২০ সালের ২০ অক্টোবর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। কিন্তু করোনা মহামারির বাস্তবতায় নিয়োগ পরীক্ষা গ্রহণ সম্ভব হয়নি। ইতোমধ্যে অবসরজনিত কারণে আরও ১০ হাজারের বেশি সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য হয়ে পড়েছে। এতে করে বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক ঘাটতি দেখা দিয়েছে। যা পাঠদান কার্যক্রমকে ব্যহত করছে।
‘এ সমস্যা নিরসর করতে আগের বিজ্ঞপ্তির পরের শূন্যপদ মিলিয়ে প্রায় ৪৫ হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। এ নিয়োগ পরীক্ষা আগামী ২২ এপ্রিল থেকে তিন ধাপে, তিন পার্বত্য জেলা ছাড়া, ৬১ জেলায় শুরু হতে যাচ্ছে।’
তিনি জানান, ২২ এপ্রিল প্রথম ধাপে পরীক্ষা হবে ২২ জেলায়। এর মধ্যে ১৪ জেলার সব ও ৮ জেলার আংশিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। দ্বিতীয় ধাপের পরীক্ষা হবে ২০ মে। এ ধাপে ৩০ জেলার মধ্যে ৮ জেলার সব ও ২২ জেলার আংশিক পরীক্ষা হবে। আর তৃতীয় ও শেষ ধাপের পরীক্ষার তারিখ এখনও নির্ধারিত হয়নি। তবে এ ধাপে পরীক্ষা হবে ৩১ জেলায়। এর মধ্যে ১৭ জেলার সব ও ১৪টিতে হবে আংশিক পরীক্ষা।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমানে সারা দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৬৫ হাজার ৫৬৬টি। এতে অনুমোদিত শিক্ষকপদ ৪ লাখ ২৮ হাজার ৭০১। এবারের পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন ১৩ লাখ ৯ হাজার ৪৬১ জন। তিনধাপে মোট এক হাজার ৮১১টি কেন্দ্রে পরীক্ষা হবে। সুশৃঙ্খলভাবে পরীক্ষা পরিচালনার জন্যই ৩ ধাপে আয়োজন করা হয়েছে।’
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, ২০১৯ সালের নিয়োগবিধি অনুযায়ী শিক্ষক নিয়োগে ৬০ শতাংশ থাকবে মহিলা কোটা, ২০ শতাংশ পোষ্য কোটা এবং ২০ শতাংশ পুরুষ কোটা (সাধারণ কোটা)। আর সব কোটাতে বিজ্ঞান বিভাগ বিষয়ে ২০ শতাংশ কোটা আছে। অর্থাৎ প্রত্যেক কোটা থেকে যারা নির্বাচিত হবেন তাদেরকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে আসতে হবে।
কোটার বিষয়টি পরিস্কার করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলম বলেন, ‘এটি ২০১৯ সালের নিয়োগবিধি। প্রাথমিক শিক্ষার ক্ষেত্রে শিক্ষক নিয়োগ অন্য চাকরির মত নয়। এটি ট্রেডিশনালি হয়ে আসছে। সরকার যদি বিবেচনা করে, সরকার ইতোমধ্যে অন্যান্য চাকরির ক্ষেত্রে বিবেচনা করেছে।
‘আমরা নিয়োগবিধি করার সময় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মতামত নিয়েছিলাম, অন্য কোটা বাদ দেওয়ার সময় আবার মতামত নিয়েছিলাম তারা বলেছে যে নিয়োগবিধি অনুযায়ী করবেন। তবে সরকার যে কোটাগুলো তুলে দিয়েছে সেগুলো এখানে প্রযোজ্য হবে না।’
নিয়োগবিধি পরিবর্তন বা সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হবে কিনা জানতে চাইলে এমন প্রশ্নে মহাপরিচালক বলেন, ‘আইন তো যুগের প্রয়োজনে পরিবর্তনযোগ্য। সরকারের যদি পলিসি সিদ্ধান্ত হয় সেক্ষেত্রে সেটি ভবিষ্যতের বিষয়।
‘প্রথাগত কোটায় পর্যাপ্ত প্রার্থী না পাওয়া গেলে সাধারণ কোটায় নিয়োগ দেওয়া হয়। সহকারী শিক্ষক নিয়োগ উপজেলায় নিয়োগ হয়। সেই উপজেলায় কোটা সীমাবদ্ধ থাকে।’