নিউজ ডেস্কঃ চলতি বছরের জুনে পদ্মা সেতু চালু করার বিষয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আশাবাদের কথা জানালেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বছরের শেষের কথা।
জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকার প্রধান বলেন, চলতি ২০২২ এর শেষ নাগাদ পদ্মা সেতু চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার লক্ষ্যে কাজ দ্রুত গতিতে চলছে।
নানা বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের জন্য এই সেতুটিকে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জিং প্রকল্পসমূহের একটি হিসেবেও বর্ণনা করেছেন তিনি।
বুধবার স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য শহীদুজ্জামান সরকারের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন সংসদ নেতা।
অধিবেশনের শুরুতেই স্পিকার প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপিত বলে জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পদ্মা সেতুর শরীয়তপুরের জাজিরা নাওডোবা প্রান্তে থেকে জেলা শহর পর্যন্ত ২৭ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। ২০২২ এর শেষ নাগাদ পদ্মা সেতু চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়ার লক্ষ্যে কাজ দ্রুত গতিতে চলছে।’
সেতুর কাজের অগ্রগতি কতটা, কী কী কাজ বাকি, সে বিষয়েও তথ্য জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘বর্তমানের সেতুতে কার্পেটিং, ভায়াডাক্ট কার্পেটিং, ওয়াটারপ্রুফ মেমব্রেন, মূল সেতুর মুভমেন্ট জয়েন্ট, ভায়াডাক্ট মুভমেন্ট জয়েন্ট, ল্যাম্পপোস্ট অ্যালুমিনিয়াম রোলিং, গ্যাস পাইপলাইন, ৪০০ কেভিএ বিদ্যুৎ ও রেল লাইনের কাজ চলমান।’
তিনি বলেন, ‘ইতিমধ্যে জাজিরা ও মাওয়া প্রান্তে আপ্রোচ রোডের কাজ ও সার্ভিস এরিয়া শতভাগ শেষ হয়েছে। মূল সেতুর ভৌত অগ্রগতি ৯৬ দশমিক ৫০ শতাংশ। ২০২০ এর ডিসেম্বরে ৪১ তম স্প্যান স্থাপনের মাধ্যমে পদ্মার দুই পাড় সরাসরি যুক্ত হয়েছে।’
দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও দারিদ্র্য বিমোচনে অবকাঠামো খাতের গুরুত্ব অপরিসীম বলে মন্তব্য করেন সরকারপ্রধান। বলেন, তাই বর্তমান সরকার দেশের ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নে বিশেষ অগ্রাধিকার দিয়েছে। বর্তমান সরকারের আমলেই গত এক দশকে অবকাঠামো খাতে দৃশ্যমান হয়েছে আমূল পরিবর্তন। দেশ এখন উন্নয়নের মহাসড়কে ধাবমান।
পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্প সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রকল্পটির প্রথম মেয়াদকাল ছিল জানুয়ারি ২০১৯ থেকে ডিসেম্বর ২০১৫। কিন্তু দেশ বিরোধী বিশেষ গোষ্ঠীর চক্রান্তে প্রকল্পের কাজ শুরুতেই বাধাগ্রস্ত হয়। বিশ্ব ব্যাংক মিথ্যা অপবাদ দিয়ে অর্থ সহায়তা বন্ধ করে দেয়। দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে মামলা হয়। কানাডার আদালতে প্রমাণ হয় যে অভিযোগটি ছিল মিথ্যা এবং কোনো দুর্নীতি হয়নি। পরবর্তীতে বাংলাদেশ সরকার নিজস্ব অর্থায়নে ২০১৪ সালে পদ্মা সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয়। প্রকল্পটির সংশোধিত ব্যয় ৩০ হাজার ১৯৩ দশমিক ৩৯ কোটি টাকা।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকারের সাহসী পদক্ষেপের অংশ হিসেবে সকল বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের জন্য পদ্মা সেতু হতে যাচ্ছে এর ইতিহাসের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জিং প্রকল্পসমূহের একটি।’