নিজস্ব প্রতিনিধি:রাজশাহীর তানোরে মারা যাওয়ার পরও ২৮ মাস ধরে প্রধান শিক্ষক বেতন উত্তোলন করে পুরো টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার তালন্দ ইউনিয়ন(ইউপির) নারায়নপুর দ্বিতীয় উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিন এমন চাঞ্চল্যকর অমানুবিক ঘটনাটি ঘটিয়েছেন। প্রধান শিক্ষকের এমন অমানুবিক কান্ডের খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকাজুড়ে ব্যাপক ক্ষোভ বিরাজ করছে। মানুষ গড়ার কারিগর হয়ে অকারিগরি কাজের জন্ম দিয়ে চরম বিতর্কিত প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিন। ফলে প্রধান শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে ফু্ঁসে উঠেছেন স্থানীয়রা। শিক্ষক নামের কুলাংগার আলাউদ্দিনকে আইনের আওতায় এনে অন্ধকার কারাগারে নিক্ষেপ করা সময়ের দাবি।
জানা গেছে, উপজেলার তালন্দ ইউপির দেবিপুর গ্রামের সিদ্দিক মাস্টারের পুত্র গোলাম রাব্বানী একই ইউপির নারায়নপুর দ্বিতীয় উচ্চ বিদ্যালয়ে বিএসসি শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এঅবস্থায় বিগত ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসের দিকে শিক্ষক গোলাম রাব্বানী মারা যান। তিনি মারা গেলেও জালিয়াতি করে প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিন প্রায় ২৮ মাস ধরে বেতন তুলেছেন। সম্প্রতি স্থানীয় কিছু ব্যক্তিরা বিষয়টি সম্পর্কে জানতে পারেন।
স্থানীয়রা জানান, একজন প্রধান শিক্ষক হয়ে কিভাবে এত ভয়ানক জালিয়াতি করতে পারে যা আলাউদ্দিন দেখিয়ে দিয়েছে। প্রধান শিক্ষক যদি এমন ভয়ানক জালিয়াতি করেন, তাহলে সে প্রতিষ্ঠানের কি অবস্থা হতে পারে। বাকি শিক্ষকদের কি অবস্থা কে জানে। আলাউদ্দিন কি একটি বারের জন্য ভাবেনি যে মৃত মানুষের রক্ত খেতে হবে, যা কোন না কোন সময় প্রকাশ পাবেই। একের পর এক ঘটনার জন্ম দিলেও বহাল তবিয়তে আলাউদ্দিন। তারমত ব্যক্তির শিক্ষকতা করার কোন যোগ্যতা নেই। তাকে অন্ধকার ঘরে নিক্ষেপ করে বিছাতু দেওয়া একান্ত প্রয়োজন। তাহলে হয় তো প্রতিষ্ঠানটির সুনাম আসতে পারে। বেতন তোলার জন্য মৃত গোলাম রাব্বানী মাস্টারের পরিবারে নিকট থেকে ১০ টির মত ফাঁকা চেকের পাতাও নিয়েছেন শিক্ষক নামের জালিয়াত আলাউদ্দিন। শুধু তাই না তিনি প্রতি বছর এসব কারনে গণধোলাই খান স্থানীয়দের হাতে। তার নিয়োগ নিয়েও রয়েছে মহা প্রতারনা।
সে ১৯৯৩ সালে সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ নিয়ে ওই সময় থেকে প্রধান শিক্ষকের বেতন উত্তোলন করেন। আবার কৃষি বিষয়ের শিক্ষকের নিয়োগও জালিয়াতি। এক কথায় যত প্রকার জালিয়াতি করা প্রয়োজন সব করেন নাম ধারী প্রতারক আলাউদ্দিন।
মৃত শিক্ষকের পরিবার কোন টাকা পায়নি বা উত্তোলন করেনি বলেও জানান।
চলতি বছরের এপ্রিল মাসের বেতন সিটে মৃত গোলাম রাব্বানীকে নিয়মিত দেখানো হয়। এপ্রিল মাসের বেতন তুলেছেন। যার সোনালী ব্যাংক হিসাব নম্বর ৬৯৩১। ২৮ মাসে প্রায় ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন ব্যাংকের ম্যানেজার ও সভাপতি এবং জালিয়াত শিক্ষক আলাউদ্দিন।
এবিষয়ে শিক্ষক আলাউদ্দিনের সাথে কিছু দিন আগে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, মাথা নষ্ট হয়ে গেছে, মৃত শিক্ষকের কেউ টাকা তুলতে পার। তার এমন কথায় গত ১৩ ডিসেম্বর মঙ্গলবার তানোর সোনালী ব্যাংক ম্যানেজার আব্দুর রাজ্জাকের সাথে কথা বলা হলে নানা ধরনের তালবাহানা করে বুধবারে তথ্য দিবেন। বুধবারে দুপুরের দিকে পুনরায় ব্যাংকে যাওয়া হলে তিনি বেতন উত্তোলনের কথা অস্বীকার করেন। আপনার কাছে তথ্য নিতে আসলাম প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিন কিভাবে জানতে পেরেছি প্রশ্ন করা হলে উত্তরে বলেন আমি বলিনি বলে এড়িয়ে যান তিনি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সিদ্দিকুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, আমি লিখিত ভাবে ব্যবস্থা নিতে জেলা অফিসারকে অবহিত করেছি। শিক্ষক আলাউদ্দিন আমার সাথে দূর্ব্যবহার করেছিল সেটা জেলা অফিসারকে অবহিত করা হয়েছে।
পুনরায় ব্যাংক ম্যানেজার আব্দুর রাজ্জাকের মোবাইলে ফোন দিয়ে বলা হয় মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ঘটনার সত্যতা পেয়ে ব্যবস্থা নিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছে, আপনি কি দেখে বললেন বেতন তুলেনি প্রশ্ন করা হলে উত্তরে বলেন ব্যাংকে আসেন কথা বলা হচ্ছে।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নাসির উদ্দিনের মোবাইলে যোগাযোগ করে এবিষয়ে অবহিত করা হলে তিনি কিছুক্ষন নিরবতা পালন করে জানান এসংক্রান্ত কোন চিঠি পায়নি বলে এড়িয়ে যান তিনি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার পংকজ চন্দ্র দেবনাথ কে অবহিত করা হলে তিনি জানান, বিষয়টি অজানা খোজ নিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।