চেয়ারম্যান ময়নার বিচরণে জাগ্রত তানোরের যুব সমাজ

তানোর প্রতিনিধি: পবিত্র মাহে রমজান মাস জুড়েই তানোরের রাজনীতির মাঠে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান উপজেলা যুবলীগের সভাপতি লুৎফর হায়দার রশিদ ময়নার বিচরণ ছিল সর্বত্রই। উপজেলা জুড়েই রাজনীতির মাঠ দাবিয়ে আগামী জাতীয় নির্বাচনের জন্য বর্তমান সরকারের নানা উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে যুব সমাজকে এক কাতারে আনতে অবিরাম ভাবে সভা ইফতার ও দোয়া মাহফিল এবং সম্মেলন করে যুব সমাজের মাঝে এক প্রকার জাগরণ সৃষ্টি করেছেন। দীর্ঘ সময় পর তৃনমুল পর্যায়ে রমজান মাস জুড়েই ছিল যুবলীগের ওয়ার্ড পর্যায়ের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন। ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাকর্মীরা সভাপতিকে পেয়ে ব্যাপক উজ্জীবিত। যার কারনেই যুবলীগের মাঝে এক প্রকার জাগরণ সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছেন চেয়ারম্যান ময়না। সবকিছু ভুলে সবাইকে একসাথে কাজ করার আহবানটাই যেন তৃনমুল যুবলীগ কে নব রুপে জাগ্রত মনোভাব এনে দিতে পেরেছেন চেয়ারম্যান ময়না।

জানা গেছে, দীর্ঘ প্রায় এক যুগ পর উপজেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিল হওয়ার দিন তারিখ ধার্য হয়েছিল গত ২১ মার্চে। কিন্তু রহস্য জনক কারনে স্হগিত হয়ে যায় কাউন্সিল। সেই সাথে ভেঙে পড়ে তৃনমূল নেতাকর্মী দের মনোবল। মুলত একারনেই সাংসদের দিক নির্দেশনা মোতাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান উপজেলা যুবলীগের সভাপতি লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না ওয়ার্ড যুবলীগের সম্মেলন পূর্বক বর্ধিত সভা শুরু করেন। বর্ধিত সভা গুলোতে তৃনমুল যুবলীগের ব্যাপক সাড়া দেখা যায়। যার কারনে ওয়ার্ড যুবলীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনগুলোতে যুবলীগের ওয়ার্ড সভাপতি সম্পাদক হতে চলে ব্যাপক প্রতিযোগিতা। প্রায় ওয়ার্ডে একাধিক নতুন মুখদের ছিল প্রচুর আগ্রহ। এমনকি ডিগ্রি মাস্টার্স পাশ যুবকরা নেতা হওয়ার আগ্রহ দেখান।
দলীয় সুত্রে জানা গেছে, চারদলীয় জোট সরকারের শুরুর দিকে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না ও সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হন জুবায়ের ইসলাম। এর পর থেকে ঘুনে ধরা যুবলীগ কে চাঙা করতে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে এদুই নেতা শুরু করেন কমিটি গঠনের কার্যক্রম। যার কারনে ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে যুবলীগের ভুমিকা ছিল চোখে পড়ার মত। এরপর ২০১৪ ও ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনেও ভোটের মাঠে ব্যাপক ভুমিকা ছিল যুবলীগের। এর এর পুরো কৃতিত্ব সাংসদ ফারুক চৌধুরীর দিক নির্দেশনা এবং চেয়ারম্যান ময়নার বিচক্ষণ নেতৃত্ব ও সাধারন সম্পাদকের অক্লান্ত পরিশ্রমে উপজেলায় যুবলীগ ফিরে পায় যৌবন। কারন এর আগে যারা নেতৃত্বে ছিলেন তারা তৃনমুল যুবলীগের নেতাকর্মীদের সেই ভাবে মূল্যায়ন ছিল না। ছিল হাতেগুনা কিছু নেতার। শুধু বড় পদের বড় বাহাদুরি ছিল। ২০১১ সালে স্হানীয় কলমা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রথম বারের মত উপজেলা যুবলীগের সভাপতি লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তখন তার রাজনৈতিক গতি ছিল যুব সমাজ কে নিয়ে। তিনি চেয়ারম্যান হয়ে দেশব্যাপী ব্যাপক সাড়া ফেলেছিলেন। কারন আওয়ামী লীগের নেতারা কখনো যুবলীগ কে ক্ষমতার চেয়ার দিতে চায়না।কিন্তু ব্যতিক্রম শুধু সাংসদ ফারুক চৌধুরী। কারন তিনি হয় তো বুঝতেন বা জানতেন কিংবা রাজনীতির অভিজ্ঞতা থেকে যুবলীগের সভাপতি কে মূল্যয়ন করেছিলেন। যার ফলেই আজ যুব সমাজ যুবলীগের ছায়াতলে আসতে শুরু হয়েছে প্রতিযোগিতা।
সাতটি ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত তানোর উপজেলা। এর মধ্যে সরনজাই, বাধাইড়, পাঁচন্দর, তালন্দ,চান্দুড়িয়া,কলমা ইউপির ওয়ার্ড সম্মেলন শেষ হয়েছে এবং ,মুন্ডুমালা পৌরসভা এবং কামারগাঁ ইউপির আংশিক সম্মেলন হয়েছে। আর তানোর পৌরসভাসহ আংশিক গুলো ঈদের পর থেকে শুরু হবে সম্মেলন বলেও জানা গেছে।
ওয়ার্ড সম্মেলন গুলোতে বড় চমক ছিল তরুন নতুন মুখদের। বেশির ভাগ ওয়ার্ডেই নতুনরা নির্বাচিত হন। আর যারা অতীতে ছিলেন তাদের কে ইউনিয়ন কমিটি কিংবা উপজেলা কমিটিতে নিয়ে আসার কথা জানান নেতারা। কারন ওয়ার্ড কমিটি গঠন হচ্ছে দীর্ঘ নয় বছর পর। মুলত এজন্যই নতুনদের জায়গা দেওয়া হয়েছে । আর এসব কিছু পরিস্কার করে তৃনমুল নেতাকর্মীদের বুঝিয়ে বক্তব্য দিয়ে অভিজ্ঞ রাজনীতির পরিচয় ছড়িয়ে দিতে সক্ষম হয়েছেন চেয়ারম্যান ময়না।
যেমন আড়াদিঘি গ্রামটি তালন্দ ইউপির মধ্যে। একটি গ্রাম একটি ওয়ার্ড। এই গ্রামে যুবলীগের সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন তোফা। তার স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন তরুন সাগর নামের একজন।
এভাবে প্রতিটি ওয়ার্ডে সভাপতি সম্পাদক হয়েছেন নতুনরা। একারনেই তৃনমুল যুব সমাজ যুবলীগের প্রতি আকৃষ্ট।
চান্দুড়িয়া ইউপির চেয়ারম্যান ইউপি আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবর রহমান জানান, পুরো রমজান মাস জুড়েই যুবলীগের ওয়ার্ড সম্মেলন হয়েছে। প্রতিটি সম্মেলনে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি উপজেলা চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না সবার মতামতের ভিত্তিতে এবং অতীতে কে কোন গ্রুপে ছিল সব ভুলে গিয়ে যে ঐক্যের কথা বলে জ্বরে আক্রান্ত তৃনমুল যুবলীগ নেতাকর্মীদের এক কাতারে এনেছেন এটা তার রাজনৈতিক নেতৃত্বের বিচক্ষণতা। আসলে কেউ যখন বড় জায়গায় যায় তার কার্যক্রমও হয় নজরে আসার মত।তিনি কোন ধরনের ঝোড় ঝামেলা ছাড়াই যে কমিটি গঠন করলেন কল্পনাতীত। অতুলনীয় নেতৃত্বের পরিচয় দিয়েছেন ময়না।
উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের ইসলাম জানান, আসলে আমি ময়না ভায়ের কথা কি বলব। তার রাজনৈতিক মনটা কত মহৎ তা কল্পনাতীত। অনেকে তার বিপরীত কাজ করেছেন সেটা তিনি জানান, তারপরও তিনি নতুন ভাবে যুবলীগ কে জাগ্রত করেছেন। দীর্ঘ সময় তিনি এবং আমি দায়িত্বে আছি। কোনদিন তার ভিতরে হিংসা বিদ্বেষ দেখেনি। বিগত স্হানীয় নির্বাচনে অনেকে অনেক ভাবে বিরুদ্ধে গেছেন। তারপরও প্রতিটি সম্মেলনে তিনি সব ভুলে নৌকার পক্ষে থাকতে হবে বলে জানিয়েছেন । আমরা সবাই নৌকার পক্ষের মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের কর্মী । যুবলীগ এক আধুনিক নেতৃত্বের প্রতিচ্ছবি যার প্রমান ময়না ভাই। তিনি শুধু কি যুবলীগের, না। যারা আওয়ামী লীগের দায়িত্বে থেকে নৌকার বিরুদ্ধে তখন নানা কায়দা কৌশলে নৌকার পক্ষের শক্তি কে অটুট ভাবে ধরে রেখেছিলেন। আসলে তার মত জনপ্রতিনিধি পাওয়া আমাদের জন্য গর্বের বিষয়।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান উপজেলা যুবলীগের সভাপতি লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না জানান, আমার রাজনীতিতে আশা সাংসদের মাধ্যমে। তার একান্ত প্রচেষ্টার কারনেই আমি আজ এখানে। সাংসদের পরামর্শে ও দিক নির্দেশনায় রমজান জুড়েই তৃনমুল যুবলীগ কে ঢেলে সাজানো হয়েছে। ঈদের পর থেকে শুরু হবে ইউনিয়ন সম্মেলন। আমি চেষ্টা করেছি তরুনদের নেতৃত্বে আনতে।কারন যারা দীর্ঘ নয় বছর ধরে ওয়ার্ড যুবলীগের দায়িত্বে ছিলেন, তারা অতীতে যুবলীগের জন্য অনেক কিছু করেছেন। আমি পরিস্কার ভাবে বলেছি যুবলীগ নেতা কারো অনুসারী হওয়া যাবে না। যুবলীগ কে মুল ধারার সাথে থাকতে হবে। যারা পদ পেয়েছে তারা যদি সংগঠনকে গতিশীল করতে না পারেন, তাহলে পদে না আসাই ভালো। তবে সম্মেলন করতে গিয়ে বুঝলাম যুবলীগ তৃনমুল পর্যায়ে অনেক শক্তিশালী এক সংগঠনে রুপ নিয়েছে। ওয়ার্ড নেতা হতে এত প্রতিযোগিতা হবে ভাবতে পারিনি। এটা অবশ্য সংগঠনের জন্য ভালো দিক। ঈদের পরে সকল ইউনিটের সম্মেলন করা হবে। তিনি আরো বলেন অতীতে কে কি করেছে সেটা দেখার বিষয় না, সবাই কে নিয়ে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। আগামী জাতীয় নির্বাচনের জন্য যে ভাবে প্রয়োজন সেভাবেই গতিশীল করা হচ্ছে যুবলীগ কে। এজন্য নেতা নির্বাচনের আগ মুহুর্তে দিক নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। এক কথায় সাংসদের পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করা হচ্ছে। অতীতে যুবলীগের ওয়ার্ড কমিটি করার জন্য তেমন ভাবে নেতাকর্মী দের পাওয়া যায়নি। আর এখন নেতা কিনা প্রতিযোগিতা। আগে ইউনিয়ন সম্মেলনেও এত নেতাকর্মীর উপস্থিতি দেখা যায় নি। এখন ওয়ার্ড সম্মেলন গুলোতে শতশত নেতাকর্মীতে ঠাসা থাকছে। অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে যুবলীগ অত্যান্ত শক্তিশালী ও গতিশীল। সবাই কে ঈদ মোবারক, সবার ঘরে ঘরে বয়ে যাক ঈদ আনন্দ।

admin

Related Posts

রাজশাহী পবাতে বাংলাদেশ জামাতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলন 

মোঃ শাকিল আহামাদ রাজশাহী : রাজশাহী পবা উপজেলার কর্ণহার থানার ২নং হুজুরীপাড়া ইউনিয়নের দারুশা ইসলামীয়া দাখিল মাদ্রাসার মাঠে (৭ই ডিসেম্বর) শনিবার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কর্ণহার থানার আয়োজনে কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত…

মহান বিজয় দিবস উৎযাপন উপলক্ষ্যে প্রস্তুতি সভা

নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজশাহীর মোহনপুরে আগামী ১৬ ইং ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উৎযাপন উপলক্ষ্যে প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুর ১২ টার দিকে উপজেলায় কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন (১৯৯৪ সালে…

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You Missed

রাজশাহী পবাতে বাংলাদেশ জামাতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলন 

  • By admin
  • December 7, 2024
  • 15 views
রাজশাহী পবাতে বাংলাদেশ জামাতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলন 

মহান বিজয় দিবস উৎযাপন উপলক্ষ্যে প্রস্তুতি সভা

  • By admin
  • December 7, 2024
  • 24 views
মহান বিজয় দিবস উৎযাপন উপলক্ষ্যে প্রস্তুতি সভা

রাজশাহীতে বিকেএসপির ভর্তি পরীক্ষা ২১ ডিসেম্বর

  • By admin
  • December 7, 2024
  • 20 views
রাজশাহীতে বিকেএসপির ভর্তি পরীক্ষা ২১ ডিসেম্বর

পবা উপজেলায় বিজয় দিবস উপলক্ষে প্রীতি ফুটবল টুনামেন্ট ও পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত

  • By admin
  • December 7, 2024
  • 12 views
পবা উপজেলায় বিজয় দিবস উপলক্ষে প্রীতি ফুটবল টুনামেন্ট ও পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত

রাজশাহীতে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ, পদত্যাগ দাবি

  • By admin
  • December 7, 2024
  • 190 views
রাজশাহীতে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ, পদত্যাগ দাবি

অর্থনৈতিক শুমারি ২০২৪ গণনাকারী ও সুপার ভাইজারদের ৪দিন ব্যাপি প্রশিক্ষণ প্রদানের উদ্বোধন

  • By admin
  • December 5, 2024
  • 53 views
অর্থনৈতিক শুমারি ২০২৪ গণনাকারী ও সুপার ভাইজারদের ৪দিন ব্যাপি প্রশিক্ষণ প্রদানের উদ্বোধন