নিজস্ব প্রতিবেদক চাঁপাইনবাবগঞ্জঃ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ভোলাহাট উপজেলার গুপিনাথপুর এলাকার মহানন্দা নদীর ডানতীর প্রকল্পের কাজ কে কেন্দ্র করে চাঁদাবাজির মামলায় ভোলাহাট উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেত্রী শাহনাজ খাতুন পলাতক রয়েছেন। তিনি পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে অনেকদিন ধরেই পলাতক রয়েছেন।
মামলার এজাহার সুত্রে জানা যায়, ঠিকাদার আকবর খান সোহেল চাঁপাইনবাবগঞ্জের আদালতে মামলাটি দায়ের করেছেন। ভোলাহাট প্রকল্পের কাজের শুরু থেকেই মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শাহনাজ খাতুন ঠিকাদারকে বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতি অভিযোগ এনে হয়রানি ও চাঁদা হিসেবে টাকা দাবি করতে থাকেন। এক পর্যায়ে চাঁদা হিসেবে ১টি ফেজার মোটর সাইকেল দাবি করলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তা দিতে অস্বীকৃতি জানান।
এ ঘটনায় তিনি তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে প্রকল্পে কর্মরত শ্রমিকদের বিভিন্ন ভয়ভীতি, হুমকি, ধামকি দিতে থাকেন। পরে বিষয়টি উর্ধ্বতন মহল অবগত হলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাগণ প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেন। এমনকি এ বিষয়ে দুই পক্ষকে মুখোমুখি করা হলেও কোনো দুর্নীতি পায়নি বলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-প্রকৌশলী আব্দুর রহমান জানান।
এদিকে ভাইস চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে তার সন্ত্রাসী বাহিনী ঠিকাদার আকবর কে মারতে উদ্যত হলে এলাকাবাসীর বাঁধার মুখে সেই দিন ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। তার সাথে থাকা আলী হায়দার নামে একজন কে দেখিয়ে বলেন ইনি একজন দুদক কর্মকর্তা, আমার সাথেই আছে। পরে স্থানীয়রা জানতে পারেন সে ভুয়া দুদক কর্মকর্তা।
এই ঘটনায় ঠিকাদার আকবর খান সোহেল মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শাহনাজ খাতুনের বিরুদ্ধে আদালতে ১টি চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করেন। এলাকাবাসী জানান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শাহনাজ খাতুন মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের বিভিন্ন সমিতির নামে টাকা উত্তোলন করেও আত্মসাৎ করেন। এসব টাকা তিনি তার বাড়ির কাজের মেয়েকে দিয়ে বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করে ঢাকা,রাজশাহী, ময়মনসিংহ সহ বিভিন্ন জায়গা থেকে উত্তোলন করতো।
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শাহনাজ খাতুন জানান,তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ ও মামলাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। শুধুমাত্র মামলা দায়ের করে তাকে হয়রানি করা হচ্ছে। আইনগতভাবে এ মিথ্যা মামলার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাবেন তিনি। জনগণের প্রতিনিধি হওয়ায় কাজ বুঝে নেওয়ার এখতিয়ার রয়েছে।
ঠিকাদার আকবর খান সোহেল জানান, চাঁদাবাজির অভিযোগটি সম্পূর্ণ সত্য। তার কাজে অনিয়ম দুর্নীতি থাকলে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগন অবশ্যই ব্যবস্থা নিতেন। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শাহনাজ খাতুন যে চাঁদা দাবি করেছেন তার প্রমাণও আছে। ইতিমধ্যে কথোপকথনের ডকুমেন্টস টি অনেক সাংবাদিক ভাইদের কাছেও রক্ষিত রয়েছে।
এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিভাগীয়-প্রকৌশলী ময়েজ উদ্দীন জানান, প্রকল্পের কাজে ও টেন্ডারে যে ডিজাইন করতে বলা হয়েছে তা শত ভাগ আমরা ঠিকাদারের কাছ থেকে বুঝিয়ে নিচ্ছি।
এ বিষয়ে ভোলাহাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহবুবুর রহমান জানান, আদালত থেকে গ্রেফতারি পরোয়ানার কপি পাওয়া গেছে। তাকে গ্রেফতার করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। পুলিশ তাকে গ্রেফতার করার জন্য তৎপরতা চালিয়ে যাচ্চেন।