গণধর্ষণের প্রতিশোধ নিতেই ফুলন হয়ে উঠেছিল দস্যুরানী ফুলন দেবী

ডেস্কনিউজঃ ফুলন দেবীকে কোন পরিচয়ে পাঠকের সামনে উপস্থাপন করা উচিৎ? তার জীবনকাহিনীকে অনায়াসে এক দুর্ধর্ষ ডাকুর ত্রাসের রাজত্ব বলে চালিয়ে দেয়া যাবে। কয়েকবার গণধর্ষণের শিকার হয়ে কোনোমতে প্রাণ নিয়ে বেঁচে ফিরে তার বদলা নিতে গিয়ে বেহমাই গ্রামের ২২ ঠাকুরকে খুন করেন নিজে হাতে। ১১ বছর জেল খেটে ফেরত আসা সেই নারীই দু’বার এমপি নির্বাচিত হয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছে সবাইকে। পুলিশের চোখকে টানা দু’বছর ফাঁকি দিয়ে নিজের মাথার বিনিময়ে অর্থ পুরস্কার ঘোষণা করতে বাধ্য করতে পারা ফুলন দেবীকে ঘৃণার চোখে দেখবেন, নাকি তার প্রতি শ্রদ্ধায় মাথা নত করবেন, তা একান্তই আপনার ব্যক্তিগত মতামত। উত্তর প্রদেশের পুলিশকে ঘোল খাইয়ে ছাড়া এই ডাকুর প্রথম জীবনের গল্প শুনলে যে কারো গা শিউরে উঠতে বাধ্য। সেই গল্পের আদ্যোপান্তই নাহয় আজ জেনে নেয়া যাক।

বর্ণবাদের বিরুদ্ধে আজ পর্যন্ত যে ক’জন যুদ্ধ করে বিজয়ী হতে পেরেছেন, তাদের তালিকায় বেশ উপরের দিকে থাকবে ফুলন দেবীর নাম। আইনের চোখে তিনি সন্ত্রাসী, নিচু জাতের মাল্লাদের কাছে ত্রাণকর্তা। মানুষের কটাক্ষকে বিন্দুমাত্র পরোয়া না করে যিনি নিজ হাতে নিজের দুর্দশার গল্প, বদলে যাওয়ার গল্প, ভদ্র সমাজের চোখে কিংবা সমাজের উচ্চ বর্ণের কাছে তীব্র বিতর্কিত এক যুদ্ধের গল্প লিখে গেছেন। আজ থেকে ১৬ বছর আগে দিল্লীতে নিজ বাসভবনের সামনে যাকে গুলি করে মেরে ফেলাটা প্রভাবশালীদের জন্য অত্যাবশ্যক হয়ে উঠেছিল, তাকে নিয়ে কিছু না লিখলে তার মতো বিপ্লবীদের প্রতি অসম্মানই জানানো হয়।

১৯৬৩ সালের ১০ আগস্ট ধরণীতে অবতরণ করেছিলেন ফুলন দেবী। উত্তর প্রদেশের ছোট্ট একটি গ্রাম ঘুরা কা পুরয়াতে থাকতেন তার বাবা–মা। মেয়ে হিসেবে জন্ম নেয়াও যেন মাল্লা সম্প্রদায়ের এই মেয়েটির আজন্ম পাপ। বাবা-মায়ের ঘাড়ের বোঝা হিসেবেই বিবেচনা করা হতো নিচু জাতের মেয়েদের। নিম্নবর্ণের মাল্লা সম্প্রদায়ের প্রধান পেশা হচ্ছে নৌকা চালানো। মাল্লা বলতে মাঝিদের বোঝানো হয়। মাঝির ঘরের আদরের কন্যা ফুলের দেবী ফুলন আর তার ছোট বোনের বিয়ের জন্য এক একর জায়গা জুড়ে নিমের বাগান করেছিলেন তাদের বাবা। জামাইয়ের মনমতো যৌতুক না দিলে মেয়েরা ভালো থাকবে কেন?

কিন্তু ফুলনের বাবার সেই সম্বলটুকুতেও বাগড়া বাঁধায় তারই আপন বড় ভাই। সমস্ত সম্পত্তি নিজের বলে ঘোষণা দিয়ে ছেলে মায়াদিনকে দিয়ে বাগানের গাছ কেটে বিক্রি করা শুরু করে দেয়। ছোটবেলা থেকেই জ্বলন্ত আগ্নেয়গিরির মতো ফুটতে থাকা ফুলন এর ঘোর বিরোধীতা শুরু করে। মায়াদিনকে সে জনসম্মুখে চোর সাব্যস্ত করে। এর প্রতিশোধ স্বরূপ, ৩০ বছর বয়সী পুট্টিলাল নামক এক লোকের সাথে মাত্র ১১ বছর বয়সী ফুলনের বিয়ে ঠিক করে মায়াদিন। ফুলন তার আত্মজীবনীতে লিখেছেন, পুট্টিলাল একজন অসৎ চরিত্রের লোক। শ্বশুরবাড়িতে শিশু ফুলনের সাথে জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন এবং নির্যাতন চলত নিয়মিত। বাবার বাড়িতে ফিরে গেলেও সমাজের দিকে চেয়ে ফুলনের পরিবার তাকে আবার শ্বশুরবাড়িতে রেখে আসে। অবস্থার কোনো পরিবর্তন না হওয়ায় ফুলন এবার মুখের উপর প্রতিবাদ জানিয়ে স্থায়ীভাবে চলে আসে বাবার বাড়িতে। মাল্লা সমাজে স্বামী পরিত্যাগ করা নারীকে চরিত্রহীনা বলে কুনজরে দেখা হতো। কাজেই ফুলনকে নিয়ে একের পর এক কুৎসা রটতে থাকে গ্রামময়।

সেসব কথায় কান না দিয়ে পিতার সম্পত্তি রক্ষার জন্য লড়াই শুরু করেন ফুলন দেবী। কিন্তু মায়াদিন তাকে উল্টো ফাঁসিয়ে দিয়ে ১৯৭৯ সালে চুরির অভিযোগে পুলিশের হাতে সোপর্দ করে। তিনদিন কারাবাসের সাজা হয় ফুলনের। এই তিনদিন ধরে পুলিশের কাছে প্রথমবারের মতো গণধর্ষণের শিকার হয় সে। সেই অপরাধীদের কোনো শাস্তি না দিয়ে বরং কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর তাকেই পরিবার ও গ্রাম থেকে বর্জন করা হয়! মালা সেনের লেখা ‘ইন্ডিয়া’স ব্যান্ডিট কুইন: দ্য ট্রু স্টোরি অফ ফুলন দেবী’ বইয়ে লেখা আছে, গ্রাম থেকে নির্বাসিত হওয়ার পর স্থানীয় ডাকুরা তাকে অপহরণ করে। আবার কেউ কেউ বলেন, ডাকাত দলে যোগ দেয়ার জন্যই নাকি তিনি প্রথম স্বামীকে পরিত্যাগ করেন। সে যা-ই হোক, ডাকাতদলে শুরু হয় ফুলন দেবীর নতুন জীবন।

ফুলন দেবী যে ডাকাতদলের সদস্য ছিলেন তাদের নেতার নাম বাবু গুজ্জর। নিষ্ঠুর এই ডাকাতের চোখ পড়ে ফুলনের উপর। বাবুর কাছে প্রায় কয়েক দফা ধর্ষিত হওয়ার পর তাকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসে দলের দ্বিতীয় নেতা বিক্রম মাল্লা। স্বজাতির উপর বাবু গুজ্জরের এই নির্মমতার প্রতিবাদে তিনি বাবুকে খুন করে নিজেকে দলের নেতা ঘোষণা করেন। নিষ্ঠাবান ডাকাত লুণ্ঠিত সম্পত্তি দরিদ্রদের মাঝে বিলিয়ে দেয়ার রেওয়াজ চালু করেন। বিক্রমের প্রেমে পড়ে যায় ফুলন। ভালোবেসে দুজন দুজনকে স্বামী-স্ত্রীর মর্যাদায় গ্রহণ করেন। তাদের বিয়ের পর বিক্রমকে সাথে নিয়ে ফুলন তার প্রথম স্বামী পুট্টিলালের গ্রামে গিয়ে জনসমক্ষে গাধার পিঠে উল্টো করে বসিয়ে গ্রামের আরেক প্রান্তে নিয়ে এসে মারধর করে। কোনো বয়স্ক পুরুষ যেন অল্পবয়সী কোনো মেয়েকে বিয়ে করে তার সাথে যেমন নির্যাতন করা হয়েছিল তেমনটা না করতে পারে, তার জন্য একটি হুঁশিয়ারবাণী স্বরূপ পত্র সমেত পুট্টিলালকে প্রায় আধমরা অবস্থায় ছেড়ে দিয়ে আসে তারা।

স্বামী বিক্রম মাল্লার কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে বন্দুক চালানো, গ্রাম লুণ্ঠন, ভূস্বামীদের অপহরণ, রেল ডাকাতি প্রভৃতি কাজে বেশ পারদর্শী হয়ে ওঠেন ফুলন। প্রত্যেকবার ডাকাতি করে আসার পর দুর্গাদেবীর মন্দিরে গিয়ে প্রাণ রক্ষার জন্য দেবীকে ধন্যবাদ জানিয়ে আসতেন ফুলন। এদিকে প্রকৃতপক্ষে বিক্রমদের দলের প্রধান ছিল শ্রীরাম নামক এক ঠাকুর সম্প্রদায়ের ডাকাত। সে সময় ঠাকুরদের সাথে মাল্লাদের ব্যবধান এতটাই বেশি ছিল যে, তারা এক জায়গায় পানির পাত্রও রাখতে পারতো না। শ্রীরাম ও তার ভাই লালারাম জেলহাজতে বন্দী থাকায় প্রায় ৮০,০০০ টাকা খরচ করে তাদের জামিন করায় বিক্রম। দলের নেতৃত্বও তাদের হাতে তুলে দিতে চায় সে। কিন্তু নিচু সম্প্রদায়ের ডাকাতরা জানত, শ্রীরাম আসলে ঠাকুর আর পুলিশদের গুপ্তচর। কাজেই তারা কেউ শ্রীরামের নেতৃত্ব মানতে চায়নি। ফলস্বরূপ, ডাকাতদল মাল্লা ও ঠাকুর দুটি পৃথকদলে বিভক্ত হয়ে পড়ে। দলের মধ্যে এই বিভাজন মানতে পারেনি শ্রীরাম। যার কারণে তার প্রধান শত্রু বনে যায় বিক্রম। পরপর দু’বার চেষ্টা চালিয়ে অবশেষে পথের কাঁটা দূর করে ফুলনকে অপহরণ করে তারা।

কানপুর থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত উত্তর প্রদেশের একটি গ্রাম বেহমাই। এই গ্রামের একটি ঘটনাই ফুলন দেবীকে ভয়ঙ্কর ডাকাতে পরিণত করেছে, দস্যুরানী হিসেবে যে পরিচয় তিনি জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত বহন করেছেন, তার সূত্রপাত ঘটে এখানে। অপহরণের পর ফুলন দেবীকে বেহমাই গ্রামে নিয়ে এসে প্রায় উলঙ্গ করে পুরো গ্রামবাসীর সামনে হাজির করে শ্রীরাম। বিক্রমের হত্যাকারী দাবী করে তার উপর অত্যাচার করার নির্দেশ দেয়া হয় গ্রামবাসীদের। প্রথমে শ্রীরাম, এরপর একে একে ঠাকুর সম্প্রদায়ের বহুলোক প্রায় ২৩ দিন ধরে তার উপরে পাশবিক নির্যাতন চালায়। গণধর্ষণের এক পর্যায়ে তাকে মৃত ভেবে ফেলে দিয়ে যায় মানুষরূপী পশুর দল। কোনোমতে একটি গরুর গাড়িতে উঠে বেহমাই থেকে পালিয়ে আসে ফুলন।

অবশ্য একটি বিস্ময়কর ব্যাপার হলো, ফুলন দেবী নিজমুখে কখনো এই গণধর্ষণের কথা সরাসরি স্বীকার করেননি। তার আত্মজীবনীর লেখিকা মালা সেনকে বলেছেন, “ওরা আমার সাথে অনেক অন্যায়-অত্যাচার করেছে”। এই একটি লাইনকেই অবশ্য ফুলন দেবীর সার্বিক অবস্থার প্রতীকীরূপ বলে বিবেচনা করা যায়। তবে ধরে নেয়া যায়, বাইরে থেকে যতই দুর্ধর্ষ মনে হোক না কেন, লোকলজ্জার ভয়কে দস্যুরাণী নিজেও উপেক্ষা করতে পারেনি। স্থানীয়রা এই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তবে ধর্ষণের শিকার অন্যান্য নারীদের মতো চুপ করে বসে থাকেনি ফুলন। নিজের অপমানের প্রতিশোধ নিতে তৎপর হয়ে ওঠে। বিক্রমের এক বন্ধু, মান সিংহ, খবর পায় ফুলনের। তার সাহায্যে মুসলিম এক ডাকুসর্দার বাবা মুস্তাকিমের কাছে পৌঁছায় সে।
বাবা মুস্তাকিমের সাহায্যে মান সিংহ আর ফুলন মিলে গড়ে তোলে নতুন একটি ডাকাত দল। নির্যাতিত হওয়ার প্রায় ১৭ মাস পর, ১৯৮১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি, শ্রীরাম আর লালারামের খোঁজ পায় ফুলন। তাদের হত্যা করতে এক বিয়ে বাড়িতে গিয়ে তার উপর নির্যাতন চালানো দুই ঠাকুরকে চিনতে পারে সে। ক্রোধে অন্ধ হয়ে সেখানে উপস্থিত ২২ ঠাকুরকে এক সারিতে দাঁড় করিয়ে গুলি করে মেরে ফেলে ফুলন। ইতিহাসে এই ঘটনা ‘বেহমাই হত্যাকাণ্ড’ বা ‘বেহমাই গণহত্যা’ নামে কুখ্যাত। এতে বেশ কিছু নিরীহ ঠাকুর মারা যাওয়ায় উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ভি.পি.সিং পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। ধীরে ধীরে লোকের কাছে ‘দস্যুরাণী ফুলনদেবী’ শব্দযুগল বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। মায়াবিনী এই ডাকু সর্দারের সমস্ত ক্ষোভ কেবল ঠাকুরদের প্রতি, মাল্লাদের মতো নিচু সম্প্রদায় যেন তার ঘরের লোক। শহরগুলোতে তাই দুর্গার বেশে ফুলনের মূর্তির বেচাকেনা শুরু হয়ে যায়। এ যেন সত্যিকারের এক রবিনহুডের গল্প।

তবে এত বড় হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে খুব সহজে ছাড় পায়নি ফুলন দেবী। ৪৮টি অপরাধকর্মের জন্য, যার মধ্যে ৩০টি ডাকাতি এবং অপহরণের অভিযোগ, প্রায় দু’বছর পুলিশকে নাস্তানাবুদ করে অবশেষে কিছু শর্তসাপেক্ষে পুলিশে কাছে ধরা দেয় ফুলন দেবী।

শর্তগুলো ছিল;-
ফুলন ও তার অন্যান্য সঙ্গীরা কেবল মধ্যপ্রদেশে আত্মসমর্পণ করবে, বিচারের জন্য তাদের উত্তরপ্রদেশে নেওয়া যাবে না।
তাদের ফাঁসি দেয়া যাবে না এবং ৮ বছরের বেশি সময় কারাবাস হবে না।
মায়াদিন কর্তৃক অবৈধভাবে দখল করা জমি ফুলনের পিতাকে ফেরত দিতে হবে।
ফুলনের পিতা-মাতাকে মধ্যপ্রদেশে পাঠিয়ে দিতে হবে এবং সরকার ফুলনের ভাইকে চাকরি দেওয়ার নিশ্চয়তা প্রদান করবে।
ফুলনের সব কয়টি শর্ত মেনে নেয় সরকার। তবে ৮ বছরের বদলে তাকে ১১ বছর কারাবাস করতে হয়। বেহমাই হত্যাকাণ্ডের প্রায় দু’বছর পর ১৯৮৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রায় ৮,০০০ দর্শকের উপস্থিতিতে আত্মসমর্পণ করে ফুলন দেবী। ১৯৯৪ সালে কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে জন্ম নেয় এক নতুন ফুলন। ১৯৯৬ সালে সমাজবাদী পার্টি (এসপি) ফুলনকে মির্জাপুর আসনে নির্বাচন করার জন্য বাছাই করে। রাজনৈতিক জগতে ফুলনের গুরু ছিলেন এই দলেরই নেতা মুলায়ম সিং যাদব। ভারতীয় জনতা পার্টি ও বেহমাই হত্যাকাণ্ডে নিহত ঠাকুরের স্ত্রীদের ঘোর আপত্তি থাকা সত্ত্বেও সেবার নির্বাচনে জয়লাভ করে ফুলন। ১৯৯৮ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচনে হেরে গেলেও, ১৯৯৯ সালের মির্জাপুর লোকসভা নির্বাচনে ফের তার আসন দখল করে একসময়ের দোর্দণ্ড প্রতাপশালী দস্যুরানী। মধ্য প্রদেশের জঙ্গল ছেড়ে অশোকা রোডের ঝাঁ চকচকে বাড়িতে গড়ে তোলে তার নতুন ঠিকানা।

জীবন বদলে গেলেও পেছনে ফেলে আসা দিনগুলো তাকে তাড়া করে ফেরে প্রতিনিয়ত। তার ব্যাপারে যে কারো কারো যথেষ্ট ক্ষোভ রয়েছে, এ কথা তিনি নিজেও জানতেন। তার সম্পর্কে বলতে গিয়ে ইন্দিরা জয়সিং জানান, “ফুলন সবসময় জানত অতীত তাকে ধাওয়া করে বেড়াচ্ছে। একজন নারী হয়ে পিতৃতন্ত্রকে চ্যালেঞ্জ করার জন্য অনেকের চোখেই জনমভর সে একজন অপরাধী বৈ আর কিছুই নয়। এ কারণেই সে সবসময় পুলিশি নিরাপত্তা নিয়ে চলাফেরা করত।”

২০০১ সালের ২৫ জুলাই পার্লামেন্ট থেকে ফেরার পথে শের সিংয়ের গুলিতে আহত ফুলনকে হাসপাতালে নেয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এই ঘটনায় আরও জড়িত ছিল ধীরাজ রানা ও রাজবীর। ১৯৮১ সালের বেহমাই হত্যাকাণ্ডের প্রতিশোধ নেয়ার জন্য ফুলন দেবীকে হত্যা করে তারা। পরবর্তীতে শের সিং দেরাদুনে আত্মসমর্পণ করে। এভাবেই পরিসমাপ্তি ঘটে বিদ্রোহী এক নারীর ঘটনাবহুল জীবনের। তার জীবনী নিয়ে ১৯৯৮ সালে শেখর কাপুর পরিচালনা করেন ‘ব্যান্ডিট কুইন’ নামের একটি চলচ্চিত্র। এখানে ফুলনের চরিত্রে অভিনয় করেছেন সীমা বিশ্বাস। এর আগে ১৯৮৫ সালে অশোক রায়ের পরিচালনায় বাংলায় ‘ফুলন দেবী’ নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করা হয়। আর মালা সেন রচিত তার আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ তো রয়েছেই। ফুলন দেবীর মতো নারীরা নিজেদের ভাগ্য নিজেরাই বদলে দিতে জানেন, নিজের পরিচয় নিজেই গড়ে নিতেন জানেন।

Related Posts

ঢাকা ইডেন কলেজ ছাত্রলীগ নেত্রী ভারতে যাওয়ার পথে বেনাপোলে আটক

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ ঢাকা ইডেন মহিলা কলেজ, মহিলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুস্মিতা পান্ডে (২৫) ও তার ভাই ছাত্রলীগের কর্মী সত্যজিৎ পান্ডে (২২) কে আটক করেছে বিজিবি ও ইমিগ্রেশন পুলিশ। ১৩ জানুয়ারি…

রাজশাহীতে ৪জন মদ পানে নিহতের ঘটনায় তদন্তে এএসপি  হেলেনা আকতার 

নিজস্ব প্রতিনিধি : রাজশাহী মোহনপুরে আলোচিত দেশিয় মদ (কট) পান করে নিহত হয়েছেন মাদক ব্যবসায়ীসহ ৪ জন ব্যক্তি। এঘটনায় রামেক হাসপাতাল থেকে সুস্থ্য হয়ে বাড়ি ফিরেছেন আরো ৪ জন মাদক…

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You Missed

চাঁদাবাজ, ঘুষবাণিজ্য ও দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ এখনো শেষ হয়নি-ডা.শফিকুর রহমান

  • By admin
  • January 18, 2025
  • 36 views
চাঁদাবাজ, ঘুষবাণিজ্য ও দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ এখনো শেষ হয়নি-ডা.শফিকুর রহমান

ডেন্টাল ওয়ান ও ডেটাস্কেপ গ্রুপের চুক্তি সই

  • By admin
  • January 18, 2025
  • 40 views
ডেন্টাল ওয়ান ও ডেটাস্কেপ গ্রুপের চুক্তি সই

তারেক রহমানের নির্দেশে দূর্গাপুরে শীত বস্ত্র বিতরন

  • By admin
  • January 14, 2025
  • 34 views
তারেক রহমানের নির্দেশে দূর্গাপুরে শীত বস্ত্র বিতরন

ঢাকা ইডেন কলেজ ছাত্রলীগ নেত্রী ভারতে যাওয়ার পথে বেনাপোলে আটক

  • By admin
  • January 13, 2025
  • 63 views
ঢাকা ইডেন কলেজ ছাত্রলীগ নেত্রী ভারতে যাওয়ার পথে বেনাপোলে আটক

রাজশাহীর মোহনপুরে সাদপন্থীদের কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ

  • By admin
  • January 12, 2025
  • 61 views
রাজশাহীর মোহনপুরে সাদপন্থীদের কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ

রাজশাহীতে ৪জন মদ পানে নিহতের ঘটনায় তদন্তে এএসপি  হেলেনা আকতার 

  • By admin
  • January 12, 2025
  • 194 views
রাজশাহীতে ৪জন মদ পানে নিহতের ঘটনায় তদন্তে এএসপি  হেলেনা আকতার