
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : কুষ্টিয়া শহরের রাইফেল ক্লাবের সামনে কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়কে পাশে প্রকাশ্য দিবালোকে এক ঠিকাদারকে হাতুড়ি পেটা করেছে সন্ত্রাসীরা। এতে গুরুতর আহত হয়েছেন শহিদুর রহমান মিন্টু নামের ওই ঠিকাদার। সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার পর হামলা এ হামলার ঘটনা ঘটে। সে সময় অনেকেই হামলার ভিডিও ধারণ করেন মোবাইলে। ভয়ে হাসপাতালেও ভর্তি হতে পারেননি ওই ঠিকাদার । চিকিৎসকের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় সেবা নিয়ে বাড়িতে অবস্থান করছেন। ভয়ে আছেন তিনি। থানায় অভিযোগ দায়ের করতেও ভয় পাচ্ছেন এ ঠিকাদার।
ঠিকাদার শহিদুর রহমানের বাড়ি কুমারখালী উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের শানপুকুরিয়া গ্রামে। তার বাবার নাম আহম্মদ আলী বিশ্বাস।
ঠিকাদার শহিদুর রহমান মিন্টু জানান,‘ তিনি প্রথম শ্রেণীর ঠিকাদার হিসেবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন। কয়েক মাস আগে মিরপুর উপজেলায় সড়কের ৭ কোটি টাকার একটি টেন্ডার ছিলো। তিনি বলেন, ওই টেন্ডারে অংশ না নিতে কয়েকজন নেতা তাকে আগে থেকেই হুমকি দিয়ে আসছিলেন। এরপরও তিনি টেন্ডারে অংশ নেন। তবে তিনি টেন্ডারে অংশ নিলেও কাজটি পাননি। তবে টেন্ডারে অংশ নেয়ার কারণে আমাকে ফোনে প্রতিনিয়ত হুমকি দিয়ে আসছিলন ক্ষমতাসীন দলের বেশ কয়েকজন নেতা।
তিনি জানান, সোমবার বেলা ১২টার দিকে ব্যক্তিগত কাজে তুমি কুষ্টিয়া শহরে এসেছিলেন। শহরের রাইফেল ক্লাব এলাকার একটি দোকানে বসে চা পান করছিরাম। এ সময় হঠাৎ করেই ১০ থেকে ১৫ জন ব্যক্তি হাতুড়িসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাকে ঘিরে ধরে। তাদের বেশির ভাগের হাতে হাতুড়ি ছিলন। এ সময় তারা ওই ঠিকাদারের দুই হাটুতে হাতুড়ি দিয়ে বেদম পেটাতে শুরু করে। এরপর জীবন বাঁচাতে দৌড় দেন ঠিকাদার। এতেও ক্ষান্ত হননি হামলাকারীরা তারা ঠিকাদারের পেছনে ধাওয়া করে আরো আঘাত করে। সড়কসহ আশেপাশে লোকজন থাকলেও তারা ভয়ে কেউ এগিয়ে আসতে সাহস পাইনি। ঠিকাদার বলেন আমার হাঁটু তেথলে গেছে। পিঠে ও বুকেও লেগেছে।
স্থাণীয় লোকজনের ধারন করা একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, শহিদুরকে ঘিরে ধরে হাতুড়ি দিয়ে পেটাচ্ছে কয়েকজন। তিনি দুই হাত দিয়ে আঘাত ঠেকানোর চেষ্টা করছেন। তারপরও তার উপর হামলা করা হচ্ছে। এক পর্যায়ে তিনি দৌড় দিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন। তার পিছু নেই দুইজন। একজনের লুঙ্গি পড়া ছিলো। তার বাড়ি মজমপুর সাদ্দামবাজার এলাকায়। আরো একজনের প্যান্ট ও শার্ট পরা ছিলো। তার মুখে মাস্ক ছিলো। এ দুইজনের সাথে আরো ১০ থেকে ১৫জন যুবক হামলায় অংশ নেয়।
শহিদুর অভিযোগ করে বলেন, এ দেশে কোন আইন বিচার নেই। নিরাপত্তার কারনে হাসপাতালেও যেতে পারেনি। যারা হামলা করেছে তারা হাসপাতাল এলাকার। কোন রকমে চিকিৎসক দেখিয়ে ওষুধ নিয়ে বাড়িতে এসেছি। তারা আমার লাইফ শেষ করে দিয়েছে। দুই হাটুতে বেদম মেরেছে। মামলা করবো কাদের নামে। এরা দেশ চালায়। মামলা করে টিতে থাকতে পারবো না। আর পুলিশ তাদের কেনা । আমি মামলা করলেও কোন লাভ হবে না। আপনারাই বলেন কার কাছে বিচার চাব?
স্থানীয়রা জানান, যারা হামলায় অংশ নেয় তারা মজমপুর এলাকার। স্থানীয় এক নেতার ক্যাডার এরা। বেশির ভাগের মুখে মাস্ক পরা ছিলো। ভয়ে কেউ তাদের বাঁধা দেয়নি। এলাকার অনেক মানুষ হামলা প্রত্যক্ষ করেছে।
কুষ্টিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাব্বিরুল ইসলাম বলেন, এমন হামলার কথা আমার কানে আসেনি। হামলা বা মারপিটের বিষয়ে থানায় কেউ কোন অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।