ডেস্ক নিউজ: বর্তমান বিশ্বের আর্থিক ব্যবস্থাপনা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অনলাইনভিত্তিক। নগদ অর্থের ব্যবহার দিন দিন কমে যাচ্ছে। এতে শ্রম ও সময় দুটোই বেঁচে যায়।
অনলাইনভিত্তিক লেনদেনের কথা চিন্তা করলেই প্রথম যে বিষয়টি মাথায় আসে সেটি হলো, অ্যাপস ব্যবহার করে লেনদেন করা এবং এটিএম কার্ড ব্যবহার করা। বর্তমান সময়ে এটিএম কার্ডের ব্যবহার প্রতিদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে শুধু এটিএম কার্ড ব্যবহার করলেই হবে না, এটি দক্ষতার সঙ্গে ব্যবহার করা দরকার। অর্থাৎ এটিএম কার্ডের স্মার্ট ব্যবহার জানতে হবে। এটি ব্যবহারে কিছু সতর্কতা মেনে না চললে বিপদে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়।
আজকের পত্রিকা অনলাইনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
যা করতে হবে
এটিএম কার্ডের গোপন পিন নম্বর কখনোই কারও সঙ্গে শেয়ার করা যাবে না। কেননা, গোপন পিন নম্বর কাউকে জানালে বা কেউ পিন নম্বর কোনোভাবে জানতে পারলে আপনার টাকা নিরাপদ না-ও থাকতে পারে।
এটিএম বুথে ঢোকার পর দ্রুত টাকা উত্তোলন করে বের হয়ে যেতে হবে এবং বুথ ব্যবহার শেষে অবশ্যই ক্যানসেল বাটন প্রেস করে লেনদেন শেষ করতে হবে। যদি ক্যানসেল বাটন প্রেস করা না হয়, সে ক্ষেত্রে ভুলক্রমে এটিএম কার্ড মেশিনের মধ্যে থাকা অবস্থাতেই বের হয়ে গেলে পরবর্তী ব্যবহারকারী ওই এটিএম কার্ডের মাধ্যমেই টাকা উত্তোলন করে নিয়ে যেতে পারে। ক্যানসেল বাটনে প্রেস করার মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া যায় যে এই কার্ড দিয়ে অন্য কেউ টাকা তুলতে পারবে না।
অনেক ক্ষেত্রে প্রতারকেরা এটিএম মেশিনের ওপর কভারে নকল ফন্ট যুক্ত করে রাখতে পারে। সে ক্ষেত্রে ওই ফন্ট ব্যবহার করলে প্রতারকদের কাছে সেই কার্ডের সব তথ্য চলে যায়। এ ক্ষেত্রে খেয়াল করে দেখতে হবে, এটিএম মেশিনে সন্দেহজনক কোনো ফন্ট দেখা যাচ্ছে কি না। এমন সন্দেহ হলে তাৎক্ষণিক ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে।
এটিএম বুথ থেকে টাকা তোলার সময় দেখা যায়, অনেকেই মেশিনের দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন। যখন আপনি এটিএম কার্ডের পিন নম্বর ব্যবহার করেন তখন প্রতারকেরা আঙুলের নাড়াচাড়া দেখে পিন নম্বর বুঝে যেতে পারে।
এ ক্ষেত্রে আপনি পাসওয়ার্ড দেওয়ার সময় অবশ্যই শরীর দিয়ে এটিএম মেশিন আড়াল করে পিন নম্বর ব্যবহার করবেন।
এটিএম কার্ড ব্যবহার করার আগে খেয়াল করতে হবে কি-প্যাড ঢিলেঢালা বা নড়ছে কি না। এ ক্ষেত্রে এমন হতে পারে যে প্রতারক চক্র মেশিনের ওপর নকল কি-প্যাড বসিয়ে রেখেছে। এতে ওই নকল কি-প্যাড ব্যবহার করলে আঙুলের ছাপ প্রতারকদের হাতে চলে যেতে পারে। এমন সন্দেহ হলেই তাৎক্ষণিক ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে।
সাধারণত এটিএম বুথে সিসি ক্যামেরা দৃশ্যমান স্থানে বসানো থাকে। যদি কোনো ক্ষুদ্র ক্যামেরা গোপনীয় কোনো জায়গায় বসানো আছে বলে মনে হয়, তাহলেও কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে। নতুবা আপনার এটিএম কার্ডের তথ্য বেহাত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
প্রতারণা এড়াতে অনেক এটিএম কার্ডে চিপস ব্যবহার করা হয়। গ্রাহকেরা যদি এটিএম কার্ড নেওয়ার সময় চিপস আছে কি না, দেখে নেন তাহলে অনেক ক্ষেত্রে জালিয়াতির হাত থেকে সুরক্ষা পাওয়া যায়। এই চিপসটি ব্যবহারই করা হয় গ্রাহকের সুরক্ষার কথা ভেবে।
সর্বোপরি কিছুদিন পরপর অ্যাকাউন্টে ব্যালান্স ঠিক আছে কি না, যাচাই করে নেওয়া ভালো।
লেখক: সিনিয়র এক্সিকিউটিভ অফিসার, ক্রেডিট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ডিভিশন, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড