ডেস্ক নিউজ ঃ ইরানের সঙ্গে বিশ্বশক্তির পারমাণবিক চুক্তি বিষয়ক আলোচনার শুরু থেকেই বিরোধিতা করে আসছে ইসরায়েল। শুধু পারমাণবিক বিষয়ই নয়, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি ও মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের প্রক্সি যুদ্ধ থামাতেও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে বিশ্ব শক্তিকে, এমনটাই দাবি জানিয়ে আসছে ইসরায়েল। এ ছাড়াও ইরানকে ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সামরিক পদক্ষেপের বিষয়টিও বিবেচণার আহ্বান জানিয়েছে দেশটি।
এবার আরটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলে নিযুক্ত ওয়াশিংটনের রাষ্ট্রদূত বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ২০১৫ সালে হওয়া পারমাণবিক চুক্তিকে পূনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা করছে। তা ইসরায়েলকে নিজের সুরক্ষায় কোনো পদক্ষেপ নিতে বাধা প্রদান করবে না।
ইসরায়েলের চ্যানেল টুয়েলভকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত টম নিডস বলেন, ইরানের সঙ্গে চুক্তি চুড়ান্ত হলে তেলআবিব চুপ করে বসে থাকবে এবং কিছু করবে না, এমন কিছু আশা করবে না যুক্তরাষ্ট্র।
টম নিডস আরও বলেন, আমরা একটি বিষয় খুব স্পষ্ট করে বলতে চাই, আমাদের সঙ্গে ইরানের চুক্তি হওয়া মানে ‘ইসরায়েলের হাত বাঁধা নয়’ আর চুক্তি না হলে তো ‘ইসরায়েলের হাত অবশ্যই বাঁধা নয়।’
তিনি বলেন ‘চুক্তি হোক বা না হোক ইসরায়েল নিজেকে রক্ষা করার জন্য তাদের যা দরকার তারা তা করতে পারে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ তারা নিতে পারে।’
এক অর্থে ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের কোনো সামরিক পদক্ষেপের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে যে কোনো বাঁধা নেই, তা জানিয়ে দিলেন রাষ্ট্রদূৎ টম নিডস।
যদিও ইসরায়েল প্রায়ই সিরিয়ার অভ্যন্তরে ইরানের ঘাটি লক্ষ্য করে প্রায়ই হামলা চালায়। এছাড়াও ইরানের মিত্র লেবাননের হিজবুল্লাহকে লক্ষ্যবস্তু করার অভিযোগ রয়েছে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে। এমনকি ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্রে সাইবার হামলা ও ইরানী বিজ্ঞানীদের গুপ্ত হত্যার অভিযোগও রয়েছে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে।
ইরান ও ইরানের বিপ্লবী বাহিনী আইআরজিসিকে ইসরায়েল নিজের অস্তিত্বের জন্য হুমকি মনে করে। এছাড়াও ইসরায়েল দাবি করে থাকে, অবরুদ্ধ গাজায় ক্ষমতায় থাকা হামাসকে ইরান অস্ত্র ও অর্থ সহায়তা দিয়ে থাকে।
তবে ইরান ও দেশটির বিপ্লবী বাহিনী আইআরজিসিও বৈধ রাষ্ট্র হিসেবে ইসরায়েলের অস্তিত্বকে স্বীকার করে না। বেশ কয়েকবার পৃথিবীর মানচিত্র থেকে ইসরায়েলকে মুছে ফেলার হুমকিও দেয়া হয়েছে ইরানের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার পক্ষ থেকে।
এর আগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেট যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এন্টনি ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে সাক্ষাতের সময়ও আইআরজিসি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
তবে পারমানবিক কর্মসূচির বিষয়ে ইরান বরাবরই বলে আসছে, পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির পরিকল্পনা দেশটির নেই। শুধুমাত্র শান্তিপূর্ণ পরমানু কর্মসূচির মাধ্যমে শক্তি উৎপাদনই ইরানের লক্ষ্য। তবে দেশটি একই সঙ্গে সাফ জানিয়ে দিয়েছে, দেশটির প্রতিরক্ষামূলক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি নিয়ে কোনো আপোষ করবে না তেহরান।